বিপাকে টেট উত্তীর্ণরা
Recruitment Scam

প্রাথমিকের শূন্যপদ নেই পূর্ব মেদিনীপুরে

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আন্দোলনে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই আবহেই ১১,৭৬৫টি শূন্য পদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২২ ০৭:২১
Share:

দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ফাইল চিত্র।

শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আবেদন জমা নেওয়া শুরু করেছে। কিন্তু রাজ্য জুড়ে প্রাথমিক শিক্ষকের শূন্যপদের যে তালিকা প্রকাশ হয়েছে, সেখানে নাম নেই পূর্ব মেদিনীপুরের। যার অর্থ শিক্ষায় আগুয়ান এই জেলায় কোনও শূন্যপদ নেই। ফলে, জেলার ‘টেট’ উত্তীর্ণ কয়েক হাজার কর্মপ্রার্থী বিপাকে পড়েছেন। ঘনাচ্ছে ক্ষোভ।

Advertisement

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আন্দোলনে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই আবহেই ১১,৭৬৫টি শূন্য পদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের দুই পড়শি জেলা হাওড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে শূন্য পদের সংখ্যা যথাক্রমে ৯৭৫ এবং ৮৪। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরে সংখ্যাটা শূন্য। এতেই উঠেছে প্রশ্ন, জেলায় ৩,২৬৫টি প্রাথমিক স্কুলের একটিতেও কি কোনও শূন্য পদ নেই!

জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সূত্রের খবর, প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষক রয়েছেন। সরকারি নিয়ম মতে ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকের অনুপাত অনুযায়ী বর্তমানে কোনও শিক্ষক পদ শূন্য নেই। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘‘উৎসশ্রী প্রকল্পে অন্য জেলা থেকে সম্প্রতি অনেক প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা আমাদের জেলায় বদলি হয়ে এসেছেন। বর্তমানে জেলার প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের অনুপাত একেবারে স্বাভাবিক।’’

Advertisement

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে হাই কোর্টের রায়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ৩০ জন চাকরি খুইয়েছিলেন। তবে ওই রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই অবস্থায় জেলায় প্রাথমিকে শূন্যপদ না থাকায় সংশয়ে চাকরি প্রার্থীরা। নন্দকুমারের বাসিন্দা টেট উত্তীর্ণ রামশঙ্কর চক্রবর্তী বলছিলেন, ‘‘আবেদন করেছি। নিজে জেলায় শূন্যপদ না থাকায় ধন্দে পড়েছি। আমাদের নিয়োগ হয়তো অন্য জেলাতেই হবে।’’

বিষয়টি নিয়ে সরব বিরোধীরা। বিজেপি বিধায়ক তথা হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অরূপ দাস বলছেন, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ছাত্র এবং শিক্ষকের বর্তমান মোট সংখ্যা কত, তা আগে প্রকাশ্যে জানানো হোক। অন্যথায় যে ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।’’ শিক্ষকের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনেরও। জানা যাচ্ছে, জেলার বহু প্রাথমিক স্কুলে মাত্র এক বা দু’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। ফলে, তাঁদের শিশু শ্রেণি থেকে চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত একাধিক ক্লাস নিতে হচ্ছে। এতে পড়ুয়াদেরই পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডার কথায়, ‘‘টেট পাশ করা কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন এই জেলায়। কিন্তু পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী জেলায় প্রাথমিক শিক্ষকের কোনও শূন্য পদ নেই। অথচ বাস্তবে জেলার অনেক স্কুলে মাত্র এক বা দু’জন শিক্ষক রয়েছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘স্কুলগুলিতে শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।’’

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি হাবিবুর বলছেন, ‘‘প্রাক-প্রাথমিক এবং পঞ্চম শ্রেণির জন্য শিক্ষক নিয়োগ করতে আরও দু’হাজার অতিরিক্ত পদের অনুমোদন চেয়ে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। ফলে, ভবিষ্যতে জেলায় আরও প্রাথমিক শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement