মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিরাপত্তা বেষ্টনী এড়িয়ে কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে অন্য গাড়ি ঢুকল, রাজ্যের পুলিশকর্তাদের সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠকে সেই প্রশ্নের মুখে পড়ল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ। তবে বুধবার যে গাড়িটি দ্রুত পেরিয়ে যাওয়ার কারণে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির চালককে আচমকা ব্রেক কষতে হয়েছিল, সেটির খোঁজ এখনও মেলেনি। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘তদন্ত কমিটি সব দিক খতিয়ে দেখছে। গাড়িটির নম্বরের সন্ধান চলছে।”
বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেলিকপ্টারে বর্ধমানের প্রশাসনিক সভায় পৌঁছন। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকায় সভা সেরে গাড়িতে কলকাতা রওনা হন তিনি। সভাস্থল থেকে কয়েকশো মিটার দূরেই দুর্ঘটনা ঘটে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় (আনন্দবাজার সেটির সত্যতা যাচাই করেনি) দেখা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি সভাস্থলের ছোট রাস্তা ছেড়ে যখন বড় রাস্তায় উঠছে, সেই সময়ে পিছন থেকে আসা একটি গাড়ি দ্রুত গতিতে পেরিয়ে যায়। সংঘর্ষ এড়াতে দ্রুত ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। সামনের আসনে বসে থাকা মুখ্যমন্ত্রীকে হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরতে দেখা যায়। কলকাতায় ফিরে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, প্রায় ২০০ কিলোমিটার গতিতে একটি গাড়ি এসে পড়েছিল সামনে। ঝাঁকুনিতে গাড়ির ড্যাশবোর্ডে তাঁর মাথা ঠুকে যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জোর বেঁচে গিয়েছি। মরেই যেতাম!’’
রাজ্য পুলিশের একটি সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ভিডিয়ো-বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়ে ‘ঢিলেঢালা’ মনোভাব নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে জেলা পুলিশ। সব জেলার পুলিশকেই ভবিষ্যতে এ নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক থাকার বার্তা দেওয়া হয়। হেলিকপ্টারের বদলে মুখ্যমন্ত্রী গাড়িতে ফিরবেন, এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দলের সঙ্গে জেলা পুলিশের সমন্বয়ের কোনও ঘাটতি হয়েছিল কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে। জেলা পুলিশের অফিসারেরা এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তদন্ত কমিটি সব দিক খতিয়ে দেখছে বলে দাবি তাঁদের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে এবং জিটি রোডে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি ও ট্রাক চলাচলের সমস্যা নিত্যদিনের। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এ বার বেপরোয়া গাড়ির জন্য দুর্ঘটনায় পড়তে হল মুখ্যমন্ত্রীকেও। পুলিশ সূত্রের দাবি, এক্সপ্রেসওয়েতে ছ’লেনের কাজের জন্য অনেক জায়গায় রাস্তা সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। গাড়ি এগোচ্ছে ধীরে। সে কারণে একটু চওড়া রাস্তা পেলেই অনেক চালক গাড়ির গতি বাড়াচ্ছেন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে গতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।