দুর্গাপুর বাঁধের লকগেট। নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুর বাঁধের ৩১ নম্বর লকগেট গত ৩১ অক্টোবর ভেঙে যায়। তার পর সাত দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পানীয় জলের সমস্যা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেলেন না দুর্গাপুরের বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবারই বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ হয়েছে। ফলে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখা গিয়েছিল। কিন্তু নতুন করে অন্য একটি সমস্যা তৈরি হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
মাইথন ও পাঞ্চেত জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৩ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সেই জল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে প্রথমে পাঠানো হবে। জল পরিশোধনের পর তা সরবরাহ করা হবে। এই পর্বটাও কিছুটা সময়সাপেক্ষ। বিশেষজ্ঞ এবং ইঞ্জিনিয়ররা জানাচ্ছেন, পরিশোধনের পর জল পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক হতে রবিবার হতে পারে। তবে যত দ্রুত সম্ভব এই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে জল সরবরাহ করা যায় সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছেন তাঁরা।
ইঞ্জিনিয়ররা আরও জানিয়েছেন, মাইথন এবং পাঞ্চেত বাঁধে জলের পরিমাণ কম থাকায় সমস্যাটা আরও গুরুতর হয়েছে। ওই দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছে, তার পরিমাণও চাহিদার তুলনায় খুবই কম। মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়লে নবনির্মিত ৩১ নম্বর লকগেটে এসে ধাক্কা মারলে ক্ষতি হতে পারে। তাই সেই ক্ষতি এড়াতে ওই লকগেটের সামনে একটি ভাসমান লকগেটকে দাঁড় করানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাস্ক ছাড়াই মন্দিরে শাহ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘দায়িত্বজ্ঞান’ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল
দুর্গাপুর বাঁধের লকগেট সারানো হলেও পানীয় জল সরবরাহ করা নিয়ে অথৈ জলে পড়েছে স্থানীয় প্রশাসন। যদিও স্থানীয় প্রশাসন পানীয় জল সরবরাহের জন্য প্রচুর জলট্যাঙ্কের ব্যবস্থা করেছে। কলকাতা পুর নিগম থেকেও জলের ট্যাঙ্ক নিয়ে আসা হয়েছে। এলাকায় ভ্রাম্যমান পানীয় জল এবং পাউচ প্যাকেট বিলি করা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও জলের চাহিদা পুরোপুরি মিটছে না।
জলকষ্টে যেমন দুর্গাপুরের বাসিন্দারা ভুগছেন, তেমনই জলের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ছোট ছোট বহু কারখানা। ইঞ্জিনিয়াররা এবং স্থানীয় প্রশাসন আশ্বাস দিলেও, সেই আশ্বাস খুব একটা সন্তোষজনক নয় বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। শুধু দুর্গাপুরই নয়, মাইথন এবং পাঞ্চেতে জল না থাকায়, জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে বাঁকুড়াতেও।