প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মহিলা। নওদার আমতলায়। ছবি: মফিদুল ইসলাম।
মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলেও আশ্বিনের শারদপ্রাতে মুর্শিদাবাদের আকাশ কখনও কখনও ঝকঝক করছে। কাশফুলের দেখা মিলছে। পুজোর সময় এল কাছে। কিন্তু কোভিড বিধি মেনে যত ছোট করেই পুজো করা হোক না কেন, চাঁদা তেমন উঠছে না। গত বছরই উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত পড়েছিল। এ বছর অনেক আগে থেকেই তাই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন বেলডাঙার বড়ুয়া কলোনি তরুণ সঙ্ঘের পুজোর আয়োজকেরা। তাঁরা ঠিক করেছেন, মাসিক কিস্তিতে চাঁদা নেবেন। তাতে এলাকার বাসিন্দারাও সানন্দে রাজি। তাই অগস্ট থেকে প্রতি মাসে কিস্তিতে চাঁদার টাকা জমা পড়েছে। পুজো পেরিয়ে গেলেও কিস্তির টাকা অনেকে জমা দেবেন।
এই পুজোর এ বারের বাজেট পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের থিম রাজস্থানের প্রাসাদের একটা অংশ। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, সাড়ে চারশোটি পরিবারের চাঁদায় তাঁদের পুজো হয়। তবে কোভিড কালে মানুষের হাতে বেশি টাকা নেই। এক সঙ্গে মোটা অঙ্কের চাঁদা দেওয়া একেবারেই অসম্ভব। তাই এক বারের বদলে চার বারে টাকা নেওয়ায় সব দিকই রক্ষা করা যাচ্ছে। পুজো কমিটির সম্পাদক পার্থ দাস বলেন, ‘‘কিস্তিতে চাঁদা পেয়ে আমরা মণ্ডপ ও প্রতিমার টাকা এক সঙ্গে মিটিয়ে দিতে পারছি। তাতে লাভও হচ্ছে।’’ পুজো কমিটির পক্ষে জানানো হচ্ছে, এই ব্যবস্থায় সাফল্য পেলে আগামী দিনে এই চাঁদা এক বছর ধরেও তোলা হতে পারে।
বেলডাঙার চ্যাটার্জি পাড়া দুর্গাপুজো কমিটি আবার ঠিক করেছে, কোভিড কালে দলবদ্ধ ভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তোলা হবে না। পাড়ার মন্দিরে এসে বাসিন্দারা নিজেদের ইচ্ছা মতো টাকা চাঁদা দিয়ে যাবেন। এই পুজোর এক উদ্যোক্তা পরিচয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুজোর খরচ যেমন বেড়েছে, তেমন মানুষের রোজগারও কমেছে। তাই আমরা স্থির করেছি, মন্দিরে যে টাকা জমা পড়বে, তার সঙ্গে কিছু যোগ করে যতটা সম্ভব ভাল ভাবে পুজো করব।’’ এই দুই পুজোর উদ্যোক্তাদেরই অনুসরণ করছেন এলাকার আরও কয়েকটি পুজোর আয়োজকেরা।