অভিযুক্ত সুদর্শন মল্লিক অবশ্য ঠারেঠোরে ভুলের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন,‘‘অন্নপূর্ণা সম্পর্কে আমার পিসি। তাঁর বাপের বাড়ির পড়ে থাকা একটি জমি আগে নিজেরা চাষ করতেন। পরে জমিটি আমাকে বিক্রি করেন। বহু বছর সেখানেই চাষাবাদ করি। ভুল হয়ে গিয়েছে।’’
গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
বহাল তবিয়তে বাড়িতেই রয়েছেন। নিয়েছেন করোনার সবক’টি টিকাও। অথচ সরকারি খাতায় তিনিই কি না মৃত! সম্পত্তি হাতানোর চেষ্টায় জীবিত বৃদ্ধার নামে মৃত্যু শংসাপত্র বের করে প্রতারণার অভিযোগ এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা থানার ধরমপুর গ্রামে।
বছর ৭৪-এর অন্নপূর্ণা পাঁজার বাপের বাড়ি গড়বেতা থানার ফতেগড় গ্রামে। শ্বশুরবাড়ি চন্দ্রকোনার ধরমপুর গ্রামেই স্বামী রাসবিহারী পাঁজা ও তিন ছেলেকে নিয়ে সংসার। পাঁজা পরিবারের অভিযোগ, বাপেরবাড়িতে পড়ে থাকা সম্পত্তি হাতানোর চেষ্টায় অন্নপূর্ণার ভুয়ো মৃত্যু শংসাপত্র বার করেছেন ফতেগড় গ্রামেরই বাসিন্দা সুদর্শন মল্লিক।
অন্নপূর্ণা পাঁজার ছেলে কমল বলেন, ‘‘গড়বেতার ফতেগড় গ্রামে দাদুর রেখে যাওয়া কিছু সম্পত্তি জমি জায়গা রয়েছে। দাদুর দুই মেয়ে। এক জন মারা গিয়েছেন। বর্তমানে ছোটমেয়ে অন্নপূর্ণা জীবিত। তিনিই আমাদের মা। বর্তমানে মা-ই বাপের বাড়ির সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকারী।’’ তাঁদের অভিযোগ, বাপের বাড়িতে পড়ে থাকা সম্পত্তি হাতানোর জন্য সুদর্শন গড়বেতার আমশোল গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে অন্নপূর্ণার নামে ভুয়ো মৃত্যু শংসাপত্র বার করেছেন।
কিছু দিন আগে সুদর্শন গড়বেতা ৩ নম্বর ব্লকের ভূমি সংস্কার দফতরে জমির রেকর্ডের জন্য আবেদন করেন। দফতর থেকে তদন্ত করতে গেলে সুদর্শনের প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারেন বৃদ্ধা অন্নপূর্ণা। পঞ্চায়েত থেকে যাচাই না করে কী ভাবে জীবিত ব্যক্তির মৃত্যু সংশাপত্র দেওয়া হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে পাঁজা পরিবার।
অভিযুক্ত সুদর্শন অবশ্য ঠারেঠোরে ভুলের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন,‘‘অন্নপূর্ণা সম্পর্কে আমার পিসি। তাঁর বাপের বাড়ির পড়ে থাকা একটি জমি আগে নিজেরা চাষ করতেন। পরে জমিটি আমাকে বিক্রি করেন। বহু বছর সেখানেই চাষাবাদ করি। ভুল হয়ে গিয়েছে।’’
গাফিলতির কথা স্বীকার করে আমশোল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উমারানি মাল বলেন, ‘‘সাধারণত জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র আমরা দিতে চাই না। কিন্তু পঞ্চায়েত সদস্যদের কথায় কিছু ক্ষেত্রে তা করে দিতে হয়। যদি ভুল হয়ে থাকে, তা হলে গ্রাম পঞ্চায়েত তা খতিয়ে দেখবে।’’