উত্তর কলকাতার রাজনীতিতে তাপস রায় ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবাদ সর্বজনবিদিত। ফাইল চিত্র।
উত্তর কলকাতায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিবাদ চরমে পৌঁছেছিল। সেই দ্বন্দ্ব ঠেকাতে এ বার পদক্ষেপ নিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাপস রায়কে দমদম-ব্যারাকপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি করল দল। উত্তর কলকাতার রাজনীতিতে তাপস-সুদীপ বিবাদ সর্বজনবিদিত, এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বিজেপির উত্তর কলকাতার সভাপতি পদে বসানো হয় তমোঘ্ন ঘোষকে। এর পরেই তাপস অভিযোগ করেন, সুদীপের কথাতেই তমোঘ্নকে সভাপতি করেছে বিজেপি। কারণ প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেছিলেন, সুদীপের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের। সেই যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজের ঘনিষ্ঠ তমোঘ্নকে সভাপতি করেছেন সুদীপ। এর পাল্টা সুদীপও আক্রমণ শানিয়েছিলেন তাপসকে।
শেষমেশ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে দুই নেতার বিবাদ থামে। এ বার সেই বিবাদ পুরোপুরি মেটাতে বরাহনগরের বিধায়ক তাপসকে পাঠানো হল দমদম-ব্যারাকপুর জেলা সভাপতির দায়িত্বে। প্রসঙ্গত, বিগত মন্ত্রিসভার রদবদলে অগস্ট মাসে মন্ত্রী হন পার্থ ভৌমিক। মন্ত্রী হওয়ার আগে তিনিই ছিলেন দমদম-ব্যারাকপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্বে। দলের ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতিতে সভাপতির পদ ছাড়েন পার্থ। তার পর থেকেই দমদম-ব্যারাকপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতির পদ শূন্য ছিল। এ বার তাপসকে সেই জেলার সভাপতি পদে বসিয়ে ‘এক ঢিলে দুই পাখি’ মারলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এর ফলে এক দিকে সুদীপের সঙ্গে তাপসের উত্তর কলকাতার বিবাদে যেমন রাশ টানা যাবে, তেমনই দমদম-ব্যারাকপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতির শূন্যপদও পূরণ করা গেল।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের পর এই তাপস রায়কেই উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি করেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু মাত্র আট মাস পর গত বছর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নজরুল মঞ্চের দলীয় অনুষ্ঠানে তাপসকে সরিয়ে ফের উত্তর কলকাতার তৃণমূল সাংসদ সুদীপকে ওই জেলার সভাপতি করে দেন। নিজের নিয়োগের পর কোনও বিতর্কিত মন্তব্য করতে চাননি তাপস। তিনি বলেন, “দল যখন আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তখন সেই দায়িত্ব পালন করেছি। এখন দল মনে করেছে দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার দায়িত্ব আমাকে দিলে সঠিক কাজ হবে। তাই আমি আমার দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করার চেষ্টা করব।”