শোভন-বৈশাখীকে ফ্ল্যাট খালি করতেই হবে। অনড় দুলাল দাস। ফাইল চিত্র।
গোলপার্কের ফ্ল্যাটে তিনি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে থাকতে দিয়েছিলেন। ভাড়াটে হিসাবে নয়, জামাই বলে। তাই ভাড়া নেওয়ার প্রশ্নই নেই। বৃহস্পতিবার এই ভাষাতেই শোভন-বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়েরফ্ল্যাট-ভাড়া সংক্রান্ত দাবির জবাব দিলেন শোভনের শ্বশুর দুলাল দাস।
বৃহস্পতিবার বৈশাখী দাবি করেন, যত দিন তাঁরা এই ফ্ল্যাটে ভাড়াটিয়া হিসেবে আছেন, ভাড়া নিয়মিত পাঠিয়েছেন। কিন্তু সেই ভাড়া নেওয়া হয়নি। এর জবাব দিতেই দুলাল বলেন, ‘‘গোলপার্কের ফ্ল্যাটটি আমরা কাউকেই ভাড়ায় থাকতে দিইনি। শোভনকে থাকতে দিয়েছিলাম। আমরা যখন ভাড়াই দিইনি, তখন ভাড়া নেওয়ার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে?’’
গোলপার্কের ফ্ল্যাট নিয়ে বিতর্ক নতুন মাত্রা নিয়েছে বুধবারই। ফ্ল্যাটের মালিক হিসেবে মহেশতলার তৃণমূল বিধায়ক দুলাল তাঁর ছোট ছেলের কোম্পানির নামে নোটিস পাঠিয়েছেন শোভনকে।তাঁকে ওই ফ্ল্যাট ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু তাতে রাজি নন শোভন-বৈশাখী। ওই ফ্ল্যাটটি যে দুলালদের পরিবারের তা মেনে নিলেও বৈশাখীরদাবি, তাঁরা ভাড়ায় থাকেন। তার প্রামাণ্য নথিও রয়েছে। তবে ভাড়া দিতে চাইলেও পারছেন না। আনন্দবাজার ডিজিটালকে বৈশাখী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আমরা যতবছর এই ফ্ল্যাটে আছি, ভাড়াটিয়া হিসেবে ভাড়াও পাঠিয়েছি। কিন্তু সেই ভাড়া ওঁরা নেননি।’’ এর পরে দুলালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার ছোট ছেলে শুভাশিস দাস ওই ফ্ল্যাটটিতে শোভনকে একা থাকার জন্য একটি ‘অ্যাকসেপট্যান্স লেটার’দিয়েছিল। এখন আমরা সেই চিঠিপ্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’’
এখানেই না থেমে দুলাল বলেন, ‘‘থাকতে দেওয়া হয়েছিল শোভন চট্টোপাধ্যায়কে একা। কিন্তু সেখানে তিনি বান্ধবীকে নিয়ে থাকবেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। তিনি একা যতদিন ইচ্ছে থাকুন। কিন্তু কোনও বান্ধবীকে নিয়ে থাকা চলবে না। আমাদের ফ্ল্যাট কোনও বেলেল্লাপনার জায়গা নয়।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, অবিলম্বে ফ্ল্যাট খালি করে দিতে হবে।
২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর বেহালার পর্ণশ্রীতে গোপাল মাস্টার লেনের পৈত্রিক বাড়ি ছেড়ে গোলপার্কের বহুতলে চলে যান কলকাতার তৎকালীন মেয়র শোভন। তারপরেই স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন। প্রথমদিকে, গোলপার্কের ফ্ল্যাটে তিনি একা থাকলেও, বর্তমানে বান্ধবী বৈশাখীকে নিয়ে রয়েছেন। তাতেই আপত্তি রত্নার পরিবারের।
বিতর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, রত্না তাঁকে খুনের হুমকি দিয়েছেন অভিযোগ তুলেবৃহস্পতিবারই কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন বৈশাখী।