— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নামেই পৌষ মাস। কিন্তু কনকনে শীতের দেখা নেই। আগামী ক’দিনেও জাঁকিয়ে শীত পড়বে, এমন পূর্বাভাস আলিপুর আবহাওয়া দফতর দিতে পারছে না। তারা বলছে, আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি পর্যন্ত কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকতে পারে। জেলাগুলিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কলকাতার তুলনায় আরও কিছুটা কম থাকবে। তার ফলে সেখানে তুলনায় বেশি শীত অনুভূত হবে।
প্রসঙ্গত, পৌষ মাস প্রায় শেষ হতে চলল। কিন্তু কলকাতা-সহ রাজ্যে এখনও তেমন তীব্র শীতের দেখা মেলেনি। এমন পরিস্থিতি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন
এবং তার জেরে জলবায়ু বদল নিয়ে যে চর্চা চলছে, তীব্র শীতের নিখোঁজ হওয়ার পিছনে তার অবদান কতটা, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। কনকনে শীত না মেলার কারণ হিসেবে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানাচ্ছেন, ‘‘উত্তর-পশ্চিম
ভারতে একের পর এক পশ্চিমি ঝঞ্ঝা হাজির হচ্ছে। তার ফলে উত্তুরে হাওয়ার স্বাভাবিক ছন্দ বিগড়ে গিয়েছে। উত্তুরে হাওয়া পূর্ব ভারতে জোরালো ভাবে বয়ে আসতে পারছে না বলেই তীব্র শীত মিলছে না। আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি চলবে বলেই মনে হচ্ছে।’’
এ দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মহানগরের উপকণ্ঠে দমদমে ১৪.২ ডিগ্রি। দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলেও তেমন হাড় কাঁপানো শীতের দেখা নেই। পুরুলিয়ায় ১২.১ ডিগ্রি, বাঁকুড়ায় ১৩.৪ এবং পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়ে ১৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে হাওয়া অফিস। কলকাতার তুলনায় কম হলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ওই এলাকাগুলিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কম থাকতেই
দেখা যায়। উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্সের এলাকাগুলিতে তাপমাত্রা দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় কম। এ দিন বাগডোগরায় ১০ ডিগ্রি, কোচবিহারে ৯.৬ এবং জলপাইগুড়িতে ১০.৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছিল। উত্তুরে হাওয়ার জোরালো উপস্থিতি না থাকায় শীতের অভাবে বিহার এবং ঝাড়খণ্ডও যেন ধুঁকছে। আবহাওয়া দফতরের খবর, ওই দুই প্রতিবেশী রাজ্যের বহু জায়গাতেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৪-৫ ডিগ্রি উপরে আছে।
মৌসম ভবনের খবর, পশ্চিমি ঝঞ্ঝার জেরে উত্তর-পশ্চিম ভারতে দিনের তাপমাত্রা অনেক কমে গিয়েছে। তার ফলে সেখানে ‘শীতল দিন’ মিলছে। অর্থাৎ, দিনভর
কনকনে ঠান্ডা, স্যাঁতসেতে আবহাওয়া। রাতেও অবশ্য শীত কিছু কম নেই। রাজস্থানের সিকারে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহবিদদের মতে, ওই ঝঞ্ঝার প্রভাব কাটলে উত্তুরে হাওয়া জোরালো ভাবে বইতে পারে। তার জেরে কনকনে শীত মিলতে পারে পূর্ব ভারতে। অন্তত পৌষ সংক্রান্তিতে কি তেমন ঠান্ডা মিলবে?
আপাতত সেই আশাটুকুর দিকেই তাকিয়ে রয়েছে এ রাজ্যের শীতপ্রত্যাশী বাঙালি।