প্রতীকী ছবি।
কোভিড-১৯-এর সৌজন্যে থমকেছে রাজ্যের বিভিন্ন আবাসনের পরিচালন কমিটির ভোট। তা না-হওয়ায় দৈনিক কাজকর্ম পরিচালনায় সমস্যার সঙ্গে বাড়ছে মতপার্থক্য। অগত্যা নিয়ম বদল করে ভোট না-হওয়ার সমস্যায় লাগাম টানল আবাসন দফতর। ঘটনাচক্রে, কিছুদিন আগে দক্ষিণ কলকাতার এক অভিজাত আবাসন পরিচালনার ভার কার হাতে থাকবে, সেই সংক্রান্ত বিবাদ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল।
আবাসনের রক্ষণাবেক্ষণ কী হবে, সেখানের ভালমন্দ কিছুর বিষয়ে কী কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে— এ সব দেখাশোনার জন্য বিভিন্ন আবাসনেই কর্তৃপক্ষ বা সোসাইটি থাকে। সেখানের নেতৃত্বদানকারীরা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। বড় আবাসনগুলিতে সাধারণ বার্ষিক সভা হয়। ভোট হয়। তুলনায় ছোট আবাসনে ভোটের রেওয়াজ থাকলেও বার্ষিক সভা আয়োজন হতে সচরাচর দেখা যায় না। সাধারণত, মে মাসে এই ধরনের ভোটগুলি হয় বলে আবাসন দফতর সূত্রে খবর। অতিমারির কারণে চলতি বছরের মে মাসে ওই সব নির্বাচন করা যায়নি। ফলে নানা আবাসনে কর্তৃত্বের দড়ি কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়। কারণ, নির্বাচিত পরিচালকদের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে তাই 'ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাপার্টমেন্ট ওনারশিপ অ্যাক্ট'-এ সংশোধনী আনল আবাসন দফতর।
সংশোধনীতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর মতো বিপর্যয়ের কারণে মে মাসে নির্বাচন-সহ বার্ষিক সাধারণ সভা করা যায়নি। সেক্ষেত্রে অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের কাছে সার্কুলার পাঠিয়ে বর্তমান পরিচালন বোর্ড বলতে পারবে যতদিন না ভোট হচ্ছে, ততদিন তারাই দায়িত্বে থাকবে। সেই রেজ়োলিউশন পাশ করতে অ্যাসোসিয়েশনের এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের লিখিত সম্মতি আবশ্যক বলে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে সংশোধনীতে। সেখানে একই সঙ্গে বলা হয়েছে, করোনা-সহ বিপর্যয় পরিস্থিতিতে লাগাম পড়লে তার ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন-সহ বার্ষিক সাধারণ সভা ক্ষমতায় থেকে যাওয়া বোর্ডকে অনুষ্ঠিত করতে হবে। আবাসনগুলিতে কোথাও এক বছর অন্তর নির্বাচন হয়, কোথাও বা তিন বছরের ব্যবধানে।
দক্ষিণ কলকাতার একটি অভিজাত আবাসনের পরিচালনা নিয়ে বিরোধ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এক পক্ষের দাবি ছিল, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোট করা যাচ্ছে না, তাই যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরা থেকে যান। কিন্তু অপর পক্ষের সদস্যেরা তা মানতে নারাজ ছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, করোনা আবহে অনলাইন পদ্ধতিতে ভোট হোক। ভারতে অনলাইনে ভোট এখনও সংবিধান সম্মত নয়।