প্রতীকী ছবি।
দুয়ারে সরকার কর্মসূচির শুরুর সময়েই প্রশাসনের শীর্ষমহল জানিয়েছিল, সরকারি পরিষেবার ঘোষণা এবং তা হাতে পাওয়ার মধ্যে ব্যবধান ঘোচানোই এর মূল লক্ষ্য। কিন্তু সেই ব্যবধান কতটা বিস্তৃত, কার্যক্ষেত্রে তা বুঝছেন কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা। সম্প্রতি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের ‘অবিশ্বাস’ কাটিয়ে তাঁদের পরিষেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা হয়েছে। এ বার যৌনকর্মীদের ক্ষেত্রেও একই কাজ করতে হল জেলা আধিকারিকদের।
দুয়ারে সরকারের শিবিরগুলিতে হাজিরা না থাকায় যৌনপল্লিতে কথা বলতে গিয়েছিলেন বীরভূম জেলা প্রশাসনের কর্তারা। সিউড়িতে জেলার অন্যতম বড় যৌনপল্লিতে যৌনকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সংশ্লিষ্টরা জানতে পারেন, আগে অনেক প্রতিশ্রুতি পেলেও সবাই পরিষেবার আওতায় আসতে পারেননি। তাই সরকারি কর্মসূচিকে তাঁরা তেমন গুরুত্বই দেননি! এ বারও কি প্রতিশ্রুতিতেই তাঁদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে— আধিকারিকদের সামনে পেয়ে সেই প্রশ্নও তোলেন যৌনপল্লির আবাসিকরা। তাঁরা জানান, ১৩৫টি পরিবারের মধ্যে মাত্র দু’টি পরিবার স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় রয়েছে। খাদ্যসাথী রয়েছে ৫৭ জনের। জাতি শংসাপত্রের চাহিদাও রয়েছে অনেকের। আলোচনার মধ্যেই দু’জনকে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড দিয়ে দেওয়া হয়। বাকিদেরও শীঘ্রই প্রকল্পের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে দাবি প্রশাসনের।
এক কর্তার কথায়, “সামাজিক সমস্যাই অনেকটা ব্যবধান তৈরি করে। এখন পরিষেবা নিয়ে প্রত্যেকে আশ্বস্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্যসাথী এবং খাদ্যসাথীর সুবিধা সবাইকে দেওয়া হবে। সবটা খতিয়ে দেখে জাতি শংসাপত্রের ব্যাপারে পদক্ষেপ করবে প্রশাসন।”
আরও পড়ুন: আরএসএস দফতরে ফাইল হাতে প্রাক্তন ডিজি, সাক্ষাৎ ভাগবতের সঙ্গে
আরও পড়ুন: রাজ্যে ক্ষমতায় এলে ৭৫ লক্ষ চাকরি, প্রতিশ্রুতি বিজেপির, ‘ভাঁওতা’ বলছে তৃণমূল-বাম-কং
আলোচনার মধ্যেই ভোটার কার্ড না থাকার সমস্যার কথাও তুলে ধরেন যৌনকর্মীরা। সমাজকর্মী বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি জানাচ্ছেন, পাচারের সঙ্গে এই সমস্যার একটা গভীর যোগাযোগ রয়েছে। কারণ, অল্প বয়সে পাচার হওয়া মেয়েরা যৌনপল্লিতে চলে গেলে তাঁদের পারিবারিক পরিচয় বা ঠিকানার প্রমাণ থাকে না। স্বাভাবিক ভাবেই ভোটার কার্ড পেতে সমস্যা হয়। জেলা-কর্তারা জানাচ্ছেন, রাজ্যে এখন ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। ভোটার কার্ড নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দাবি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। আধিকারিকমহল মনে করছে, এই সমস্যা শুধু একটি জেলার নয়। প্রতিটি জেলায় এমন বহু মানুষ এখনও সরকারি পরিষেবার বাইরে রয়েছেন। নারী, শিশু এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, “কোনও অংশের মানুষ পরিষেবার আওতা থেকে যাতে বাদ না যান, তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি জেলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”