রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামে বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘দুয়ারে পিজি হাসপাতালের ডাক্তার’ প্রকল্প। ফাইল ছবি।
‘দুয়ারে সরকার’-এর পরে রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামে আজ, বুধবার শুরু হচ্ছে ‘দুয়ারে পিজি’। প্রকল্পের পুরো নাম ‘দুয়ারে পিজি হাসপাতালের ডাক্তার’।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলার উৎকর্ষ কেন্দ্রগুলির প্রথম সারিতে আছে এসএসকেএম বা পিজি হাসপাতাল। সেখানকার পরিষেবা প্রান্তিক এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। কোনও রোগীকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করাতে হলে, সেখানে তাঁকে কী চিকিৎসা দিতে হবে, তা-ও প্রেসক্রিপশনে লিখে দেবেন এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা।
১৬ জানুয়ারি এসএসকেএমের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ওই হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রান্তিক এলাকায় পাঠাতে হবে, যাতে সেখানকার বাসিন্দারা ঘরের কাছেই উৎকর্ষ কেন্দ্রের চিকিৎসা পান। জুনিয়র ডাক্তারেরাও বাইরের জগৎ সম্পর্কে জানতে পারবেন। আজ, বুধবার ও কাল, বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ির রবীন্দ্র ভবন ও খাজরা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম শিবির হবে। তাতে যোগ দিতে মঙ্গলবার দুপুরে পিজি-র ৩৬ জন চিকিৎসককে নিয়ে একটি বাস রওনা দিয়েছে। প্রকল্পের সূচনা করেন এসএসকেএমের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুপার পীযূষ রায়।
মেডিসিন, শিশুরোগ, ত্বক, এন্ডোক্রিনোলজি, কার্ডিয়োলজি, নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসকেরা ওই শিবিরে গিয়েছেন। তাতে জুনিয়র, ইন্টার্ন, সিনিয়র ডাক্তার ছাড়াও কয়েক জন শিক্ষক-চিকিৎসক রয়েছেন। ইসিজি, প্যাথলিক্যাল পরীক্ষার জন্য টেকনোলজিস্টদেরও পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন আশাকর্মীদের মাধ্যমে ১১০০ জন রোগীকে চিহ্নিত করেছেন। শিবিরের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সোমবার রাতেই কেশিয়াড়িতে পৌঁছন পিজি-র অতিরিক্ত মেডিক্যাল সুপার অমিত মজুমদার, সহকারী সুপার হীরক চক্রবর্তী, চিকিৎসক রণজিৎ সাহা ও হীরক কাপ্তান।
পিজি সূত্রের খবর, প্রতি মাসে এই ধরনের তিনটি শিবির হবে বিভিন্ন জেলায়। শিবিরেই ওষুধ মিলবে। এর পরে ঝাড়গ্রাম ও সুন্দরবনে শিবির হবে। চিকিৎসকদের চার-পাঁচটি দল তৈরি করা হয়েছে, তাদের পালা করে পাঠানো হবে প্রতি মাসে। এক সিনিয়র চিকিৎসক বলেন, ‘‘অনেক প্রান্তিক এলাকার মানুষ আগের দিন রাতে পিজি-তে এসে থেকে, পরের দিন দীর্ঘ লাইন দিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে ফেরেন। এই ধরনের শিবিরে তাঁদের অনেক সুবিধা হবে। আবার গ্রামে যাওয়া নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদেরও ভয় বা জড়তা কাটবে।’’ শিবিরে যোগদানকারী চিকিৎসকদের শংসাপত্র এবং কিছু সাম্মানিক দেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে স্বাস্থ্য সূত্রের খবর।