Anubrata Mandal

Chandranath Adhikary: ‘সাহসী’ চন্দ্রনাথের শুধু পরিবারকে নিয়েই চিন্তা

বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের এই শল্য চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী গিয়েছিলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে দেখতে।

Advertisement

বাসুদেব ঘোষ 

বোলপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২২ ০৬:৩৩
Share:

চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

তাঁর ‘সাহস’ এখন আলোচনার কেন্দ্রে। তিনি যা করেছেন, সচরাচর বীরভূমে বাস করে তা কেউ করেন না। করার ‘সাহস’ পান না।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের এই শল্য চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী গিয়েছিলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে দেখতে। সেখানে তিনি ‘বেড রেস্ট’ বা সম্পূর্ণ বিশ্রামের কথা লিখে দিয়ে আসেন। রাতে সেই চন্দ্রনাথই সরাসরি অভিযোগ করেন, অনুব্রতের মতো এক জন ‘প্রভাবশালী’ বলেছেন বলেই তিনি তাঁকে সাদা কাগজে ‘বেড রেস্ট’ লিখে দিতে বাধ্য হয়েছেন। অনুব্রতের খাসতালুকে থেকে তাঁর বিরুদ্ধে এই ভাবে মেরুদণ্ড সোজা করে কথা বলার উদাহরণ হাল আমলে মেলে না বলেই জানাচ্ছেন স্থানীয় লোকজনেরা।

কোথা থেকে এল এই সাহস?

Advertisement

চন্দ্রনাথের কথায়, ‘‘আমার শিরদাঁড়া এখনও বাঁকেনি! তাই আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পেরেছি।’’

জন্ম-কর্ম বোলপুরে। আদি বাড়ি রয়েছে সোনাঝুরি পল্লি এলাকায়। বাবা ও মা বিশ্বভারতীর অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। বর্তমানে তাঁরা কলকাতায় থাকেন। বিশ্বভারতীর পাঠভবন থেকেই শিক্ষার পাঠ শুরু চন্দ্রনাথের। বরবারের মেধাবী ছাত্র। বিশ্বভারতী বোর্ডের মাধ্যমিকে দ্বিতীয় ও উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছিলেন। স্নাতকোত্তরেও দ্বিতীয় স্থান ছিল তাঁর। জয়েন্টে দারুণ ফল করে ১৯৯৫ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদে কাজ করে বীরভূমে ফিরেছেন। ২০১৬ সালে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে জেনারেল সার্জেন পদে যোগ দেন চন্দ্রনাথ। তার পরে পাকাপাকি স্ত্রী ও ৮ বছরের মেয়েকে নিয়ে বোলপুর ইন্দ্রাপল্লিতে থাকতে শুরু করেন তিনি। সম্প্রতি তাঁর হাত ধরে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে বেশ কিছু জটিল অস্ত্রোপচারেও সাফল্য মিলেছে।

মঙ্গলবার রাতে শুধু অনুব্রতের দিকে আঙুল তুলেই থামেননি চন্দ্রনাথ। দাবি করেন, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে প্রথমে সেখানে যেতে তিনি রাজি ছিলেন না। কিন্তু তাঁকে যেতে বাধ্য করা হয়। এ দিন তিনি বললেন, ‘‘আমি ছোট থেকেই অন্যায়ের সঙ্গে আপস করি না। তাই হাসপাতালে একাধিক অনিয়মের বিরুদ্ধেও আমি মুখ খুলেছি। এ ক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে, সরকারি চিকিৎসক হিসেবে এ ভাবে কারও বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা করা অনৈতিক, তাই প্রতিবাদ করেছি।’’

প্রতিবাদে ভয় করেনি?

চন্দ্রনাথের মন্তব্য, ‘‘আমার নিজের জন্য কোনও চিন্তা নেই। তবে, পরিবার নিয়ে উদ্বেগে রয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement