মিঠাই পেতে দল নয়, বার্তা অভিষেকের

প্রতিপক্ষ হিসাবে বিজেপি এবং সিপিএম-কংগ্রেসের যুগলবন্দিকে প্রত্যাশিত আক্রমণ আছেই। কিন্তু সেই সঙ্গেই পঞ্চায়েত ভোটের লক্ষ্য সামনে রেখে ঘর গোছানোর কাজেও নজর দিলেন তৃণমূলের যুব সভাপতি।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

বারাসত শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৫
Share:

বরণ: বারাসতের কাছারি ময়দানের সমাবেশে তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়। রয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

প্রতিপক্ষ হিসাবে বিজেপি এবং সিপিএম-কংগ্রেসের যুগলবন্দিকে প্রত্যাশিত আক্রমণ আছেই। কিন্তু সেই সঙ্গেই পঞ্চায়েত ভোটের লক্ষ্য সামনে রেখে ঘর গোছানোর কাজেও নজর দিলেন তৃণমূলের যুব সভাপতি।

Advertisement

বারাসতের কাছারি ময়দানে বৃহস্পতিবার ভিড়ে ঠাসা সমাবেশে দলের কর্মী-সমর্থকদের প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা, ‘‘ভয় পাবেন না, অভিমানীও হবেন না! গ্রামে-গ্রামে, অঞ্চলে-অঞ্চলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করুন।’’ মঞ্চে ছিলেন বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়ও। নানা সময়ে দলের মঞ্চে সৌগতবাবুর মতো নেতারা সরব হয়েছেন পুরনো কর্মীদের মর্যাদা

চেয়ে। স্বয়ং অভিষেকই এ দিন বলেছেন, ‘‘পুরনো কর্মীদের যথাযোগ্য সম্মান দিতে হবে। যারা মন্ডা-মিঠাই খাওয়ার জন্য এসেছে, তাদের জন্য দরজা খোলা আছে। চলে যান!’’ প্রসঙ্গত, যুব সভাপতির সমাবেশে ছিলেন বিরোধী শিবির ছেড়ে সদ্য শাসক দলে আগত মানস ভুঁইয়ার মতো নেতাও।

Advertisement

আরও পড়ুন: দিলীপের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন

অভিষেকের এ দিনের সমাবেশ ছিল যে জেলায়, সেই উত্তর ২৪ পরগনায় জেলা পরিষদ থেকে পুরসভা— সব নির্বাচিত সংস্থাতেই তৃণমূলের মধ্যে একাধিক গোষ্ঠী। পুরনো কর্মীদের সঙ্গে ‘নব্য তৃণমূলে’র বিবাদও সেখানে কম নেই। অভিষেকের সভাকে সামনে রেখে গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে প্রলেপ দেওয়াই জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। প্রায় ব্রিগে়ড সমাবেশের মতো বিপুল প্রস্তুতি সেই জন্যই। আর তা বুঝে প্রয়োজনীয় বার্তা দিয়েছেন অভিষেকও।

বারাসতের জমায়েত অনেকটা অক্সিজেন দিয়েছে তৃণমূল শিবিরে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ব্রাত্য বসুর মতো মন্ত্রী, সাংসদ সৌগতবাবু, কাকলি ঘোষ দস্তিদারদের বক্তব্যেও ছিল সেই প্রসঙ্গ। তৃণমূলের যুব জেলা সভাপতি পার্থ ভৌমিক তৃপ্ত কণ্ঠে বলেছেন, ‘‘হাজার মিছিল, ৮০টার উপরে কর্মিসভাই করেছি। এত দিনের চেষ্টা সার্থক। যারা সমালোচনা করেছিল, তারা যোগ্য জবাব পেয়েছে!’’

ভিড় দেখে খুশি অভিষেকও। দুর্ঘটনার আঘাত থেকে সেরে ওঠার পরে তাঁর নিজের কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে প্রথম সভায় যা ভিড় হয়েছিল, তার চেয়ে বেশিই লোক ছিল এ দিন। তরুণ সাংসদের কথায়, ‘‘যাঁরা পাঁচ ঘণ্টা ধরে বসে রয়েছেন, তাঁরা বক্তৃতা শুনতে নয়, সিদ্ধান্ত নিয়েই এসেছেন। তৃণমূল হল একটা জেদ, আবেগ! আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলে যাচ্ছি, এই সভার পরে উত্তর ২৪ পরগনায় পঞ্চায়েত ভোটের পরে অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েও বিরোধীদের খুঁজে পাওয়া যাবে না!’’ যা শুনে বিরোধীদের আবার আশঙ্কা, এর পরে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া বন্ধ করতে বিপুল উৎসাহে না নেমে প়ড়়েন!

শিশুপাচার প্রসঙ্গে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম না করেই অভিষেক এ দিন ফের মন্তব্য করেছেন, ‘‘বিজেপি-র নেতারা বাচ্চা চোর! শিশুপাচারের মতো নিকৃষ্ট কাজ করেও টাকা নিয়েছে। দ্রৌপদী না পঞ্চপাণ্ডব, কার পকেটে টাকা ঢুকেছে, তদন্ত করে দেখা দরকার! বিজেপি মানে বাচ্চা ঝাড়া পার্টি!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement