প্রতীকী ছবি।
দেশের অন্যত্র শুরু হলেও সোমবার, ২৫ মে কলকাতা থেকে দেশীয় উড়ান শুরু হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার নবান্নে জানালেন, রাজ্যের যা পরিস্থিতি, তাতে কলকাতা থেকে দেশীয় যাত্রী উড়ান ৩০ মে চালু করলে ভাল হয়। বাগডোগরা থেকে ২৮ মে চালু করা যেতে পারে বলেও তিনি এ দিন জানান। তিনি এ নিয়ে কেন্দ্রকে অনুরোধ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে। এ দিনই ফেসবুক লাইভে বিমানমন্ত্রী হরদীপসিংহ পুরী জানান, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে জুন মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক যাত্রী উড়ানও চালু করতে আগ্রহী কেন্দ্র।
সোমবার থেকে দেশীয় উড়ান চালানোর বিষয়ে আপত্তি এসেছে বিভিন্ন রাজ্য থেকে। তামিলনাড়ু সরকার জানিয়েছে, গণ পরিবহণ না-চলায় বিমানবন্দর থেকে যাত্রীদের যাতায়াতের সমস্যা হবে। কর্নাটক জানিয়েছে, বেশ কিছু রাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের তারা আবশ্যিক ভাবে নিভৃতবাসে পাঠাতে চায়। কেরল এবং অসম জানিয়েছে, অন্য শহর থেকে আসা যাত্রীদের তারা নিভৃতবাসে পাঠাতে চায়। বিমানমন্ত্রীর দাবি, সংক্রমিত যাত্রীকে বিমানে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। নিভৃতবাসের প্রশ্ন কেন উঠছে?
দেশ জুড়ে ইতিমধ্যেই নতুন উড়ান সূচি বানিয়ে ফেলেছে উড়ান সংস্থাগুলি। সেই মতো বিমানবন্দরে সময় বা স্লট দেওয়া হয়েছে তাদের। নতুন করে কোনও রাজ্য বাদ দিয়ে উড়ান চালাতে হলে সমস্যায় পড়বে তারা। দেশীয় উড়ান চালু করা নিয়ে অন্য অনেক বিষয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। মুম্বইবাসী সুজয় দত্তের যেমন প্রশ্ন, ‘‘ তিন-চার দিনের জন্য কলকাতায় গেলে কি নিভৃতবাসে থাকাটা আবশ্যিক? হলে কত দিন?’’
আরও পড়ুন: অণ্ডাল থেকে রাজ্যে চালু হবে অন্তর্দেশীয় উড়ান
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, আপাতত ২৫ মে থেকে প্রতি দিন ৮০টি উড়ান কলকাতায় নামার কথা। গড়ে ১০০ জন করে যাত্রী এলে প্রতি দিন অন্য শহর থেকে কলকাতায় আসবেন প্রায় ৮ হাজার যাত্রী। প্রতি দিন এত যাত্রীকে সরকারি নিভৃতবাসে পাঠানো রাজ্যের পক্ষে সম্ভব নয়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গৃহ-নিভৃতবাসের অনুরোধ করা হবে। সেটা না-মানলে কী করা হবে তা বলা হয়নি। তাঁদের উপরে সরকারি নজরদারি চালানো কার্যত অসম্ভব।
কলকাতা, বাগডোগরা এবং দুর্গাপুরের ক্ষেত্রে শহরে নামা যাত্রীদের প্রথমে থার্মাল স্ক্রিনিং বা প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার কথা। এ ছাড়াও কলকাতার ক্ষেত্রে, ওই যাত্রীকে একটি ফর্ম পূরণ করার কথাও বলা হতে পারে। সেখানে নিজের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দিতে হবে। প্রতিটি উড়ান সংস্থাকেও পুরো যাত্রী তালিকা এবং তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে দিতে হবে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কলকাতায় নামার পরে কোনও যাত্রীকে পরীক্ষার সময়ে সন্দেহ হলে তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হবে। তাঁদের সরকারি নিভৃতবাসে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। কোনও যাত্রীর শরীরে করোনা সংক্রমণ পেলে তাঁর সহযাত্রীদের খুঁজে বার করে তাঁদেরও নিভৃতবাসে পাঠানো হবে।