শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী মামলা করেছেন। নারদ কাণ্ডে তাঁর স্বামীর নাকি সম্মানহানি করা হয়েছে, অতএব এর যথাযোগ্য বিচার হোক, এটাই চান তিনি। অর্থাৎ তিনি সত্যটা জানেন। শোভন চট্টোপাধ্যায় মানহানিকর কিছু (এক্ষেত্রে ঘুষ নেওয়া) করেননি, এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। বিশ্বাসে যে হেতু মিলায়ে বস্তু, অতএব এ ক্ষেত্রে তর্ক নিষ্প্রয়োজন।
তর্কের তবু অবকাশ থাকে। এই ঘটনায়, অজস্র ঘটনাতেই। ইশরত জাহান নামে এক তরুণীকে ‘এনকাউন্টারে’ মারার এতগুলো বছর পরেও প্রশ্ন কিন্তু থেকেই গিয়েছে। সত্যটা কী? ইশরত কি লস্করের সদস্য ছিলেন? না কি ছিলেন না? মৃত্যুর এতগুলো বছর পরেও উঠে আসছে সাজানো সাক্ষ্যের নানান বৃত্তান্ত। অর্থাৎ কোথাও একটা মিথ্যা থেকে গিয়েছে।
মিথ্যা থেকে যাচ্ছে অনেকগুলো জায়গাতেই। অন্তত, সত্য-মিথ্যা নিয়ে অনেকগুলো প্রশ্নে সংশয়ের অবকাশ থেকে যাচ্ছে জনমনে। শুভেন্দু-ফিরহাদের টাকার যে অভাব নেই এ নিয়ে কারও সংশয় নেই। বঙ্গারু লক্ষ্ণণের কি টাকার অভাব ছিল বলে মনে করেন তৃণমূল নেত্রী? টাকার অভাবই কি মানুষকে ঘুষের পথে নিয়ে যায় বলে তিনি বিশ্বাস করেন? যদি তাই হয়, তবে নারদ এবং বঙ্গারু দুই স্টিং কাণ্ডে তফাৎ দেখলেন কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? নারদে চক্রান্ত, বঙ্গারুতে প্রতিবাদ। দুই ক্ষেত্রে যাত্রা তো একই ছিল, ফল পৃথক হল কেন? সত্যটা কী?
সত্যের সন্ধানে ছুটে চলি আমরা। নতুন সময়ে, নতুন পরিসরে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বাড়ছে। গাঁধীজির শিক্ষা ছিল, পন্থায় যদি মিথ্যার মিশেল লাগে তাহলে শেষ পর্যন্ত তা হিতকারী হয় না। হিতের পথে যেতে গেলে সত্যের পথেই থাকতে হবে। সে পথ হতেই পারে কন্টকাকীর্ণ।
কন্টকাকীর্ণ পথেও কী ভাবে সত্যের পথে এগোতে হয়, তার একটা বৃহৎ দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে সব সময়ই জ্বলজ্বল করে। গাঁধীজি, বাপু, এ দেশের জনক। মহাসমারোহে ফাদার্স ডে পালন করলাম আমরা। দেশের জনককে স্মরণ করার প্রাসঙ্গিকতা বুঝছি কি আমরা? বোঝার সময় আসছে। না বুঝলে সমূহ বিপদ।
আমরা তিমির বিনাশী হতে চাই। হ্যাপি ফাদার্স ডে, বাপু!