দুর্ভোগ রোগীদের

স্পেশ্যালিস্টের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছেন জিপি-রা

একাধিক উপসর্গ, নানা ধরনের শারীরিক অস্বস্তি। সাধারণ মানুষকে প্রথমেই যে প্রশ্নটার উত্তর খুঁজতে হয় তা হল, কোন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে? চারদিকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ভিড়ে তাঁর কাকে প্রয়োজন তা বুঝে ওঠাটাই বড় কথা। এর পরের হেঁয়ালিটা থাকে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরে।

Advertisement

সোমা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:০৮
Share:

সম্মেলনের উদ্যোক্তারা মনে করেন, তরুণ চিকিৎসকদের এ ব্যাপারে সচেতন করাটাই সবচেয়ে বড় কাজ। সেই কারণেই দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ ডাক্তারদের পাশাপাশি স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়া এবং সদ্য এমবিবিএস পাশ করা ডাক্তারদের সামনে বিষয়টি তুলে ধরতে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট দেবাশিস দত্তের কথায়, ‘‘এখন সবাই স্পেশ্যালিস্ট! তাই জেনারেল মেডিসিন সম্পর্কে সম্যক ধারণাটা তলানিতে এসে ঠেকেছে। বহু ক্ষেত্রেই এত পরীক্ষানিরীক্ষার দরকারই পড়ে না। ডাক্তার রোগীকে ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা করেই অনেক কিছু বুঝতে পারেন।’’ একই কথা বলেছেন ক্রিটিক্যাল কেয়ার-এর চিকিৎসক অজয় সরকারও। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যারা পুরনোপন্থী, তারা মনে করি, সব ডাক্তারকে সব কিছু জানতে হবে। তার পরে তাঁরা কী প্র্যাকটিস করবেন সেটা পরের কথা। কিন্তু জেনারেল মেডিসিন সম্পর্কে ধারণা থাকাটা খুব জরুরি।’’ উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অব এডিনবরা চিকিৎসকদের ক্লিনিক্যাল দক্ষতার উপর বেশি জোর দেয়. কিন্তু আমাদের দেশে পরীক্ষানিরীক্ষার উপর নির্ভরতাটা বেশি।

মেডিসিন, গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি, হেমাটোলজি, চেস্ট, কার্ডিওলজি, নিউরোলজি, নেফ্রোলজি-সহ সব ধারার ডাক্তাররাই হাজির থাকবেন ওই সম্মেলনে। ক্লিনিক্যাল ট্রেনিং-এর প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি উঠে আসবে চিকিৎসায় নৈতিকতার অমোঘ প্রশ্নটিও। আয়োজক কমিটির সভাপতি, গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট অশোকানন্দ কোনার যেমন বললেন, ‘‘হয়তো কোনও রোগীকে ডাক্তার একটা দামী পরীক্ষা করাতে বললেন, কিন্তু রোগী জানালেন তাঁর টাকা নেই। এ ক্ষেত্রে কী হবে? এখানেই ডাক্তারের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা বার বার উঠে আসে।’’

Advertisement

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জেনারেল ফিজিশিয়ান-এর ধারণাটাই ক্রমশ উঠে যাচ্ছে। তাই মানুষের বিভ্রান্তিও বাড়ছে। এই সম্মেলন তাই অনেকটাই শিকড়ে ফেরার চেষ্টা। যদিও পিয়ারলেস হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুজিত কর পুরকায়স্থ মনে করেন, শুধু সমস্যার কথা বলে কোনও লাভ নেই। ভাবতে হবে সমাধানের কথাও। সেটা কী রকম? তিনি বলেন, ‘‘এমবিবিএস পাশ করার পরে সব ডাক্তারই সঙ্গে সঙ্গে স্নাতকোত্তরে ভর্তির সুযোগ পান না। ছোটখাটো কোনও নার্সিংহোমে ঢুকে যান তাঁরা। ফলে কাজের ক্ষেত্রে এঁদের গণ্ডিটা সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। নির্দিষ্ট কিছু বেসরকারি হাসপাতালে এঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সব বিভাগেই হাতেকলমে কাজ করা ও কাজ শেখার সুযোগ পাবেন এঁরা।’’ নানা ধরনের রোগীর চিকিৎসা শেখার ফলে এঁদের আত্মবিশ্বাসও ক্রমে বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement