—ফাইল চিত্র।
ছিল চার। এক লাফে হয়ে গেল দশ! এবং সেটা করা হল কোনও রকম বিজ্ঞপ্তি বা ঘোষণা ছাড়াই।
বিভাগীয় পদোন্নতির পরীক্ষায় এ ভাবে বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিয়ম পরিবর্তন ঘিরে স্বাস্থ্য ভবনের বিরুদ্ধে অস্বচ্ছতা ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছেন সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ।
ওই চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বা এমসিআই-এর নির্দেশ অনুযায়ী পদোন্নতির পরীক্ষায় অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদের জন্য দু’টি গবেষণাপত্র থাকা বাধ্যতামূলক। আর প্রফেসর পদের জন্য অন্তত চারটি গবেষণাপত্র থাকতেই হয়। গত বছর পর্যন্ত এই নিয়মে পরীক্ষায় বসেছেন সরকারি চিকিৎসকেরা। কিন্তু এ বছর কোনও বিজ্ঞপ্তি না-দিয়ে আচমকাই জমা দেওয়া সর্বাধিক গবেষণাপত্রের সংখ্যা ১০ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, ন্যূনতম গবেষণাপত্র থাকলেও পদোন্নতির পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার জন্য নম্বর নেই। চারের বেশি গবেষণাপত্র থাকলে তবেই মিলবে নম্বর।
এ বছর পদোন্নতির পরীক্ষার্থী চক্ষু বিভাগের এক চিকিৎসকের প্রশ্ন, ‘‘অনলাইনে আবেদন করতে গিয়ে নিয়ম বদলের কথা জানতে পারি। কিন্তু যে-কোনও পরীক্ষায় পাঠ্যক্রম বদল হলে পরীক্ষার্থীদের তা জানানো হয়। স্বাস্থ্য দফতর ব্যতিক্রম হবে কেন?’’ পদোন্নতির পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল গত ২৭ মে। আবেদনের শেষ দিন ছিল ১০ জুন। ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘এত অল্প সময়ের মধ্যে কারও পক্ষে নতুন করে গবেষণাপত্র প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তা হলে কি কোনও কোনও প্রার্থীকে পদোন্নতির পরীক্ষায় বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্যই নতুন নিয়ম!’’ অন্য এক চিকিৎসকের বক্তব্য, ন্যূনতম গবেষণাপত্রের জন্য কোনও নম্বর না-রাখার ব্যাপারটা গত বছরের তুলনায় একেবারে আলাদা। আগের বার যে-নিয়ম ছিল, তার ভিত্তিতেই পরীক্ষা হওয়ার কথা। ‘‘আমাদের প্রশ্ন, পছন্দের প্রার্থীদের সুবিধা পাইয়ে দিতেই কি নীতি বদল হল? পদোন্নতির প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব আছে,’’ বলছেন ওই ডাক্তার।
তবে স্বাস্থ্য ভবনের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, পুরো বিষয়টিরই অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘ন্যূনতম গবেষণাপত্রের সংখ্যা তো ‘এলিজিব্ল ক্রাইটেরিয়া’ (পরীক্ষায় বসার প্রাথমিক যোগ্যতা)। তার উপরে নম্বর দেওয়া হবে কেন? আগে যদি তার উপরে নম্বর দেওয়া হয়ে থাকে, তা হলে ভুল হয়েছে।’’
স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিজ্ঞপ্তি যখন জারি হয়েছিল, তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না। তাই বিষয়টি আমার জানা নেই।’’