রোগীর চিকিৎসা করতেই ‘ভয় পান’ চিকিৎসকেরা

পরস্পর আস্থা বৃদ্ধির মাধ্যমে চিকিৎসায় গাফিলতি সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা কমাতে এ দিনের আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

তাঁরা ভয় পাচ্ছেন! স্বাস্থ্য কমিশনের ডাকা আলোচনা সভায় তা খোলাখুলি জানিয়ে দিলেন বেসরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকেরা। সভার শুরুতেই স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সমন্বয় না থাকলে বৃত্ত সম্পূর্ণ হবে না।’’

Advertisement

সমন্বয় বৃত্তে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করে শিশুরোগের চিকিৎসক পল্লব চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক চিকিৎসকের বক্তব্য, ‘‘এখন রোগী সঙ্কটজনক হলে চিকিৎসা করতে ভয় পাই। এই ভয়টা দূর হওয়া দরকার।’’ শনিবার নিউটাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে যে বার্তা পেয়ে দর্শকাসন থেকে উঠে চিকিৎসকদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। পরস্পর আস্থা বৃদ্ধির মাধ্যমে চিকিৎসায় গাফিলতি সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা কমাতে এ দিনের আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানেই তাঁদের অনুযোগ জানান বেসরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রের প্রশাসকেরা।

প্রথমার্ধে অ্যাপলো গ্লেনেগলসের সিইও রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বিল না মিটিয়ে চলে যাওয়ার ঘটনা প্রায় ঘটছে। একটা ফোরাম চাই যেখানে আমরা ক্ষোভ জানাতে পারি।’’ ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হসপিটালস ইন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’র ভাইস প্রেসিডেন্ট রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা রয়েছে, তা নিয়েও ‘কিন্তু’ আছে। এটা কেন, তা দেখতে হবে।’’ স্বাস্থ্য কমিশনে সব প্রতিনিধি কেন সরকার মনোনীত, সেই প্রশ্ন তোলেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রুমা পাল। সরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রের জন্য কেন এ ধরনের কমিশন নেই, তা-ও জানতে চান তিনি।

Advertisement

চিকিৎসক কুণাল সরকার দ্বিতীয়ার্ধে বলেন, ‘‘কমিশনের কথা শুনলে প্রাণে ভয় হয়। ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তার প্রাথমিক রায় ডাক্তারদের নিয়ে গঠিত মঞ্চেরই দেওয়া উচিত।’’ শল্য চিকিৎসক কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে কমিশন তাঁদের বক্তব্য না শুনেই ক্ষতিপূরণের রায় দিয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘ছ’মাস আগে কী ঘটেছে তার দায়িত্ব নিতে পারব না। এখন তেমন কিছু হয় না। বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় গাফিলতির অভিযোগ কমিশন দেখে। চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে কমিশন মাথা ঘামায় না। ভয় পাবেন না।’’

উল্টোদিকে এনআরএসের চিকিৎসক কে শর্মা জানান, অনেক ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের দেওয়া টার্গেটের ভারে রোগীকে অহেতুক কড়া মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দিতে বাধ্য হন চিকিৎসকেরা। রোগীর বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার পিছনে আরএমও’দের একাংশের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। চিকিৎসকদের একাংশ হাসপাতালের বিলে স্বচ্ছতা আনার উপরে জোর দেন। সভা শেষে কমিশনের তরফে এসএসকেএমের শল্য চিকিৎসক মাখনলাল সাহা বলেন, ‘‘যা উঠে এল, তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement