রুনির পাকস্থলীতে প্রচুর পরিমাণে ধাতব পদার্থের হদিশ পান ডাক্তাররা।—নিজস্ব চিত্র।
পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বছর বাইশের রুনি খাতুন। পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসককে জানিয়েছিলেন, বেশ কিছু দিন ধরেই অস্বাভাবিক আকার নিয়েছে রুনির পেট। সঙ্গে ব্যথা।
পরীক্ষা করতে গিয়ে চমকে যান চিকিৎসকরা। আল্টা সোনোগ্রাফি করে তাঁরা রুনির পাকস্থলীতে প্রচুর পরিমাণে ধাতব পদার্থের হদিশ পান। তার পরেই তাঁরা অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। বুধবার রামপুরহাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক সিদ্ধার্থ বিশ্বাস অস্ত্রোপচারের জন্য রুনির পাকস্থলি কাটতেই তাজ্জব হয়ে যান। একে একে রুনির পেট থেকে বেরিয়ে আসে, সোনার হার, কানের দুল, বালা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাপের কয়েন।
প্রায় এক ঘণ্টা পনেরো মিনিট ধরে চলে অস্ত্রোপচার। তার পর হিসাব করে দেখা যায়, রুনির পেটে জমা হয়েছিল ৬০টি কয়েন, একটি সোনার হার, গোটা কয়েক কানের দুল, বালা। সব মিলিয়ে প্রায় ২ কিলোগ্রাম ধাতব পদার্থ। সিদ্ধার্থবাবু বলেন, ‘‘ওই বিপুল পরিমান ধাতব পদার্থ জমা থাকার কারণেই পাকস্থলি স্বাভাবিক ভাবে কাজ করতে পারছিল না। ফলে বমি ও পেট ব্যথা হচ্ছিল রুনির।’’
অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে বেরলো সোনার হার, কানের দুল।
আরও পড়ুন: ফের গণপিটুনি নাগরাকাটায়
মাড়গ্রামের বাসিন্দা রুনির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসকরা জানতে পারেন যে ওই তরুণী মানসিক ভারসাম্যহীন। গত কয়েক বছর ধরে যে কোনও জিনিস খেয়ে ফেলার অভ্যাস তৈরি হয়েছিল ওই তরুণীর। হাতে পেলেই সে সব কিছু খেয়ে ফেলতেন। এ ভাবেই একে একে এত ধাতব জিনিস জমা হয় রুনির পেটে। ওই তরুণীর পরিবারের দোকান আছে বাড়ির সঙ্গেই। সেখান থেকেই সে বিভিন্ন কয়েন মুখে পুরেছে বলে পরিবারের সদস্যদের অনুমান। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল। পরিবারের সদস্যদের রুনিকে মনোবিদের কাছে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতে চলতি মাসেই প্রায় ২০ হাজার কর্মীকে বকেয়া ডিএ-র ১০%, সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর