বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।
হস্তান্তরের ঘোষণা হয়েছিল আগেই। বছর শেষে নতুন উদ্যমে আগামীর পথ চলা শুরু করে দিল সল্টলেকের ‘ইনস্টিটিউট অব রিপ্রোডাক্টিভ মেডিসিন’। নিজের হাতে গড়ে তোলা ওই প্রতিষ্ঠানকে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ বা আইসিএমআরের হাতে তুলে দিলেন সারা দেশে বন্ধ্যত্ব নিরাময়ের সুপরিচিত প্রবীণ চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন আইসিএমআরের ‘রিপ্রোডাক্টিভ বায়োলজি অ্যান্ড ম্যাটারনাল, চাইল্ড হেল্থের’ প্রধান রাধেশ্যাম শর্মা।
তাঁর দর্শনকে সম্মান জানিয়ে আইভিএফ পদ্ধতিতে চিকিৎসা ও গবেষণার কাজ কে বা কারা চালিয়ে নিয়ে যাবেন, নবতিপর চিকিৎসক বৈদ্যনাথবাবুকে সেটা ভাবিয়ে তুলেছিল। আর সেই ভাবনা থেকেই কেন্দ্রীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের হাতে প্রতিষ্ঠানের দায়ভার তুলে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রথমে সম্মতি মেলেনি। দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও ইতিবাচক বার্তা না-পেয়ে গত বছর জানুয়ারিতে পঞ্চসায়রের বাঙালি মালিকানাধীন একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে নিজের প্রতিষ্ঠান দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন ওই প্রবীণ চিকিৎসক। ঘটনাচক্রে, হস্তান্তরের ব্যাপারে যে-দিন তিনি বেসরকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে ফোন করতে যাবেন, সে-দিনই আসে আইসিএমআরের প্রতীক্ষিত বার্তা। সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এ দিন সেই অর্পণ-প্রক্রিয়া পূর্ণতা পেল।
বৈদ্যনাথবাবু বলেন, ‘‘দায়িত্ব হস্তান্তরের পরে প্রতিষ্ঠানের ভূমিকায় কোনও বদল হচ্ছে না। চিকিৎসা, গবেষণার কাজ যেমন চলছিল, তেমনই চলবে।’’ আগামী দিনে কী ধরনের গবেষণা হবে, তা ধীরে ধীরে ঠিক হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে ফেরা আটকাতে দাওয়াই, বাংলাদেশে সীমান্ত এলাকায় বন্ধ মোবাইল পরিষেবা
রাধেশ্যাম জানান, ‘ন্যাশনাল গাইডলাইনস ফর অ্যাক্রেডিটেশন, সুপারভিশন অ্যান্ড রেগুলেশন অব এআরটি ক্লিনিকস’ তৈরির ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন বৈদ্যনাথবাবু। তাঁর অভিভাবকত্বে এই বিষয়ে জাতীয় স্তরে যে-রূপরেখা তৈরি হয়েছে, তারই উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে সারোগেসি বিল এবং এআরটি বিল। ভারতে নলে নিষেক (নলজাতক) প্রক্রিয়ার যুগান্তকারী অবিষ্কারের হোতা বঙ্গসন্তান সুভাষ মুখোপাধ্যায়। সেই বাংলারই এই ধরনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে আইসিএমআর গর্বিত বলে মন্তব্য করেন রাধেশ্যাম।
সারোগেসি বিল সম্পর্কে রাধেশ্যাম বলেন, ‘‘লোকসভায় পাশের পরে রাজ্যসভা থেকে বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। চারটি বৈঠকও হয়েছে সিলেক্ট কমিটির সঙ্গে। আগামী অধিবেশনে বিলটি পাশ হবে বলেই আশা করা হচ্ছে। আশা করি, ‘অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজিস’ বা এআরটি বিলটিও আসবে পরবর্তী অধিবেশনে।’’