নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের অধিবেশনে মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সুমন বল্লভ।
নিজেদের মধ্যে ফোনে কথা বলার বিষয়ে দলের জনপ্রতিনিধিদের আরও বেশি সতর্ক হওয়ার বার্তা দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে নিজেদের লেটারহেডে কোনও রকম চাকরির সুপারিশের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন তিনি। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের বিশেষ সাংগঠনিক অধিবেশনে মমতা বলেন, “কোনও বিধায়ক, মন্ত্রী নিজেদের লেটারহেডে চাকরির অনুরোধ করবেন না। মুখে কথা বলুন। ফোনে ও সব বলবেন না! হোয়াটস্অ্যাপও সব তুলে নিচ্ছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘জেলায় জেলায় আইবি-র লোকেরা বিজেপির। বিধায়কদের তো বিধানসভায় দেখা হচ্ছে। সাংসদদের সঙ্গেও মোটামুটি যোগাযোগ আছেই।”
সেই সঙ্গে তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য ছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের একাংশ। দলকে সাবধান করে তিনি বলেন, ‘‘খুব সতর্ক থাকবে। এখন লুটেরার দল ১০টা চোখ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ১০টা টেলিভিশনের স্টিং অপারেশন টিম। এজেন্সি যারা নেতৃস্থানীয়দের বউ, ছেলেমেয়েরা দোকানে গেলে জিজ্ঞেস করে আসে কত দাম, কী নিল কিন্তু বিজেপির লোকেরা লক্ষ কোটি টাকা নিয়ে গেলেও সিবিআই- ইডি হবে না!”
নিয়োগ-দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের সুপারিশের তথ্য উঠে এসেছে। তার প্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই সতর্ক-বার্তা বলে রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা। এই নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, ‘‘এক বিধায়ক প্যাডে লিখে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে দিয়েছিলেন। তাই এই নির্দেশ। দিদি প্রমাণ করলেন, দুর্নীতি হয়েছে।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূলের কোনও শিক্ষাই হয়নি! আশা করেছিলাম, এত কিছুর পরে মুখ্যমন্ত্রী বলবেন, এনাফ ইজ এনাফ! আর দুর্নীতি, অন্যায় বরদাস্ত করা হবে না। কিন্তু তিনি বলছেন, ফোনে কথা বলবেন না, লেটারহেডে চিঠি লিখবেন না। মানে দুর্নীতি চলবে, লেনদেন চলবে। কেউ যেন কোথাও ধরতে না পারে, সেটা দেখতে হবে! খবর যাতে না বেরোয়, সেটা দেখতে হবে।’’