প্রতীকী ছবি।
এসেও আসছে না শীত। যাই যাই করেও যাচ্ছে না গরম। এই আসা-যাওয়ার মাঝে বঙ্গ রাজনীতির নিৰ্বাচনী হাওয়া ক্রমশ গরম হয়ে চলছে। সেই নির্বাচনের প্রস্তুতিতে আর কালক্ষেপ করতে চায় না নির্বাচন কমিশন। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এ বার জেলাশাসকদের বৈঠক হতে চলেছে। আর তা হবে সশরীরে। আগামী শুক্রবার সকাল এগারোটা থেকে দু’অর্ধে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও)। থাকবেন সিইও দফতরের পদস্থ আধিকারিকেরাও। রাজ্যের আগামী ভোট প্রস্তুতির ওই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে মধ্য কলকাতার একটি বণিক সভার আলোচনা কক্ষে।
শেষ লোকসভা নির্বাচনের সময়ে অগস্টে জেলাশাসকদের নিয়ে প্রথম প্রস্তুতি বৈঠক হয়েছিল। এ বার কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের জন্য ভোট প্রস্তুতির বৈঠক পিছিয়েছে বলে মত প্রশাসনিক আধিকারিকদের। তাই আক্ষরিক অর্থে শুক্রবার বিধানসভা ভোট প্রস্তুতিতে জেলাশাসকদের প্রথম বৈঠক হতে চলেছে।
বৈঠকের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হতে চলেছে আগামী বছরে রাজ্যের বিধানসভা ভোট প্রস্তুতি। সেখানে বুথ, ভোটকর্মী, পরিবহণ, নিরাপত্তা, ভোটযন্ত্র—সামগ্রিকভাবে ভোট আয়োজনের নানা খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা বলে জানাচ্ছেন বিভিন্ন জেলাশাসকরা। পাশাপাশি, শেষ নির্বাচনে কোনও জেলায় কাজ করতে গিয়ে সমস্যা হয়ে থাকলে সেগুলির প্রসঙ্গ অনেক সময় বৈঠকে ওঠে বলে মত নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞ বিভিন্ন প্রশাসনিক আধিকারিকের। এখন ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবে তা নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানাচ্ছেন জেলাশাসকদের অনেকে। তাছাড়া, আগামী ডিসেম্বরের শুরুতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা বৈদ্যুতিন ভোট যন্ত্রের ‘ফার্স্ট লেভেল অব চেকিং’ (এফএলসি) বা প্রথম দফার পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। তা নিয়েও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ভোট সম্পর্কিত স্বাস্থ্য বিধি ওই আলোচনায় উঠে আসতে পারে মত ভোট বিশেষজ্ঞদের অনেকের।
কেন সশরীরে বৈঠক? সে প্রসঙ্গে দীর্ঘদিন নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্তদের মতে, ভার্চুয়াল বৈঠকে অনেক সময়ে মত প্রকাশে বিঘ্ন ঘটে। সবাইকে নিয়ে সশরীরে বৈঠক হলে তাতে অনেক বেশি মতের আদানপ্রদান ঘটে। যা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অনেকাংশে সহায়ক হয়। জেলাশাসকদের সঙ্গে দুর্গাপুজোর আগে পরে সিইও-সহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা একাধিক বৈঠক করেছেন। ওই সব ভিডিয়ো বৈঠকগুলিতে আলোচ্য বিষয় ছিল বুথ পরিদর্শন, বুথের পুনর্বিন্যাস। সর্বোপরি গুরুত্ব পেয়েছিল খসড়া ভোটার তালিকার কাজ।
করোনা প্রভাব বজায় রাখলেও আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিলনাড়ু, কেরল এবং পুদুচেরির নির্বাচন সময় মতো সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে তারা পরিকল্পনা করছে, তা স্পষ্ট করেছে নির্বাচন কমিশন। কয়েকদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা বলেছিলেন, “আগামী দিনে সব নির্বাচনই সময়ে করা হবে।” তাই নির্বাচন নির্দিষ্ট সময় করার জন্য প্রস্তুতিতে সময় নষ্ট করতে চায় না কমিশন। ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আক্রান্তের বাড়িতেও বর্মবস্ত্র পরে যাবেন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। একইসঙ্গে আশি বছরে বেশি বয়সী এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের বাড়ি বাড়িও যাবেন তাঁরা। সেখানে গিয়ে তাঁদের সম্পূর্ণ তথ্য নেবেন। কারণ, আগামী বছরে ভোটে আশি বছরের বেশি বয়সি এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্নরা ইচ্ছা করলে বাড়ি থেকেই পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন।