চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দির চত্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
জেলাশাসক নির্দেশ দিলেও জেলার নিচুতলার অফিসার, কর্মীদের একাংশ তা গ্রাহ্য করছেন না। বুধবার ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক সভায় এমনটা জানালেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সামনে বিধানসভা ভোট। এই পরিস্থিতিতে উঁচুতলার অফিসারদের নির্দেশ অমান্য করার প্রবণতা যে প্রশাসনের অন্দরে অন্য বার্তা বহন করতে পারে তা অজানা নয় মুখ্যমন্ত্রীর। মমতাকে তাই বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘ডিএম ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে কেন করছেন না। বলছে দেখা যাবে। বড়রা বললে কী হবে। আমি তো নিচুতলায় ফেলে রেখে দেব। এত বড় সাহস হয় কী করে। কার জন্য এই সাহসটা বেড়েছে আমি জানতে চাই। এটা ভাববেন না এক বছর আছে ইলেকশনের মমতাদিকে বেগ দিই।’’
এই সূত্রেই এ দিন ঝাড়গ্রামের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কলকাতার বাসিন্দা এক চিকিৎসকের প্রসঙ্গ তোলেন। জানা যাচ্ছে, ওই চিকিৎসকের বীরভূমের বোলপুরে দু’টি জমি রয়েছে। একটি চিকিৎসকের নিজের নামে। অন্যটি তাঁর স্ত্রীর নামে। চিকিৎসকের স্ত্রীর জমির মিউটেশন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকের জমির মিউটেশন হয়নি এখনও। অভিযোগ, নিচুতলার কর্মীদের একাংশের জন্যই আটকে রয়েছে মিউটেশন।
আরও পড়ুন: ল্যাব-রিপোর্টে ‘ভুল’ সংশোধনে তৎপর কমিশন
অভিযোগ পেয়েছেন মমতা। সেই সূত্রেই ভূমি ও অর্থসচিব মনোজ পন্থকে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘তুমি হয়তো মনোজ ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছ, ডিএম ইনস্ট্রাকশন দেওয়ার পরেও তোমার লোকাল লেভেলে অনেক এলআর কাজটা শেষ করছে না। শ্যাল আই গিভ ইউ ওয়ান এগজ়াম্পল রাইট নাও। বোলপুর তোমার এলআরও। একজন বিখ্যাত ডাক্তার তাঁর জমির মিউটেশনের ব্যাপারে। বাদ বাকিটা আর আমি তোমাকে বললাম না কী চেয়েছিল।’’
আরও পড়ুন: প্রোটোকলে বেপরোয়া হাসপাতাল বাড়াচ্ছে উদ্বেগ
ভোট এগিয়ে এলেও তিনি যে কাজে গাফিলতি বরদাস্ত করবেন না চিকিৎসকের জমির মিউটেশন প্রসঙ্গে সে বার্তাও দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘মমতাদি এ সব কেয়ার-টেয়ার করে না। আমি সারাজীবন ডেয়ার করার লোক। আমি ঝড় পেরিয়ে চলার লোক। পরিষ্কার বলছি যারা এ সব করছে তুমি (ভূমি সচিব) তার সঙ্গে ইমিডিয়েট কথা বলবে। ডাক্তার ভদ্রলোকের নামটা বললে তুমি নিজেই লজ্জা পাবে।’’
আরও পড়ুন:দুই থানা অভিযোগ নেয়নি, দাবি শমীকের
বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি দু’-তিন দিন আগেই আমার নজরে এসেছিল। সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) ও মহকুমাশাসককে দেখতে বলেছি। ওঁরা সেটা দেখছেন। ওটা প্রসেসে আছে। শীঘ্রই কাজ হয়ে যাবে।’’ প্রায় একই বক্তব্য অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) শুভ্রজ্যোতি ঘোষেরও। তিনিও বলছেন, ‘‘দ্রুত কাজটি হয়ে যাবে।’’