West Bengal Assembly Election 2021

বিহারের জোটে বার্তা, চিন্তারও রেখা বাংলায়

বিহারে মহাজোটের শরিক হয়ে কংগ্রেস লড়েছে ৭০টি আসনে, তার মধ্যে জয় পেয়েছে ১৯টিতে। আর ২৯টি আসনে লড়ে বামেরা জিতেছে ১৬টি আসন।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী 

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২০ ০০:১০
Share:

প্রতীকী চিত্র।

নীতীশ কুমার এবং এনডিএ-র যাত্রা প্রায় ভঙ্গ করে দিয়েছিল তারা! সেই অর্থে বিহারে মহাজোট ‘সফল’। মহাজোটের মধ্যে বামেদের ফল আবার আরও ভাল। কিন্তু বিহারের সেই মহাজোটের অন্দরের কিছু সমীকরণ বাংলায় বাম শিবিরকে কিছু অশনি সঙ্কেতও দেখাচ্ছে।

Advertisement

বিহারে মহাজোটের শরিক হয়ে কংগ্রেস লড়েছে ৭০টি আসনে, তার মধ্যে জয় পেয়েছে ১৯টিতে। আর ২৯টি আসনে লড়ে বামেরা জিতেছে ১৬টি আসন। মহাজোটের মধ্যে ‘সাফল্যের হার’ ধরলে কংগ্রেস যেমন আরজেডি এবং বামেদের চেয়ে পিছিয়ে, তেমনই তাদের উদ্যোগহীনতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেসের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত এবং সিদ্ধান্তহীনতা নিয়েই এখন কাটাঁছেড়া হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতেই বাংলায় কংগ্রেসের হালচাল দেখেও সংশয় রয়েছে বাম শিবিরে। তাদের একাংশের প্রশ্ন, এ বারও জোট বা আসন সমঝোতা ২০১৬ সালের মতো এলোমেলো চেহারা নেবে না তো?

বিহারের ফল সামনে আসার পরেই আসন-রফার সূত্র নিয়ে এক প্রস্ত বিতর্ক শুরু হয়েছে বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে। বিহারে ১২টি আসন জিতে নেওয়ার পরে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেছেন, কংগ্রেস সব সময় তার ঐতিহ্যগত অবস্থান থেকে সব কিছু বিচার করছে। কিন্তু অতীতের ঐতিহ্যের সঙ্গে বর্তমানের কাজকেও মেলাতে হবে! দীপঙ্করবাবুর মতে, বিহারে বাম ও কংগ্রেস ৫০টি করে আসনে লড়লে ফল আরও ভাল হত। আসন জয়ের ‘স্ট্রাইক রেট’-এর প্রশ্নেই দীপঙ্করবাবুকে ২০১৬-র বাংলার ফলের কথা পাল্টা মনে করিয়ে দিয়েছেন এ রাজ্যের এআইসিসি পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদ। তাঁর যুক্তি, সে বার বাংলায় কংগ্রেস ৪৪টি আসন জিতেছিল অর্থাৎ ‘স্ট্রাইক রেট’ প্রায় ৫০%। আর বামেরা ৩৩টি আসন পেয়েছিল, তাদের সাফল্যের হার অনেকটাই কম ছিল। জিতিনের মতে, ‘‘শুধু পাটিগণিত নয়, জোট আসলে গড়ে ওঠে আদর্শ ও অভিন্ন লক্ষ্যের উপরে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: টেট থেকে নিয়োগ ডিসেম্বরে, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

বাংলায় বাম ও কংগ্রেসের আসন ভাগের আনুষ্ঠানিক আলোচনা এখনও শুরু হয়নি। সিপিএম তথা বামেরা অবশ্য তৈরি হয়েই বসে আছে। কংগ্রেসের তরফে বিলম্ব, একের পর এক যৌথ কর্মসূচিতে যোগ দিতে অনীহা, নানা রকমের দাবি সংবলিত বিবৃতিও বাম শিবিরে সংশয়ের বাতাবরণ তৈরি করছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর অবশ্য দাবি, ‘‘জোট নিয়ে কারও দুশ্চিন্তার কারণ নেই! কংগ্রেস এবং বামেরা জোট বেঁধেই বাংলায় বিজেপি ও তৃণমূলের বিকল্প গড়ে তুলবে। জোটের সরকার ক্ষমতাতেও আসবে।’’

তবে বিহারের দৃষ্টান্ত দেখে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির মিম-কে নিয়ে উদ্বিগ্ন অধীরবাবুরা। তাঁদের আশঙ্কা, যে সংখ্যালঘু ভোট বাম ও কংগ্রেসের দিকে আসতে পারে, সেখানে ভাগ বসিয়ে মিম বিজেপির সুবিধা করে দিতে পারে। অধীরবাবুর কথায়, ‘‘লন্ডনে ওদের দফতর আছে। সেখানে কী লেনদেন হয়, অনেকেই জানেন। শাহিনবাগে মুসলিম মহিলা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও ওয়াইসি চুপ করে থাকেন। আর এখন বলছেন বাংলায় সংখ্যালঘুদের ত্রাতা হবেন!’’

বিহারের অঙ্ক মাথায় রেখেই বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বুধবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, সে রাজ্যে লোকসভা ভোটে বিজেপি তথা এনডিএ-র যা শক্তি ছিল, তা অনেকটাই কমিয়ে নিজেদের জমি শক্ত করে নিয়েছে মহাজোট। বাংলাতেও ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তি একজোট হয়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের রাস্তা কঠিন করে দেবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement