প্রতিবন্ধী উন্নয়ন নিয়েও রাজ্যকে দুষছে কেন্দ্র

বুধবার দিল্লি ফেরার আগে রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন নিয়েও কেন্দ্রের সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগ আনলেন কমলেশ। ‌যা অবশ্য অস্বীকার করেছেন রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০০
Share:

কমলেশকুমার পাণ্ডে

প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কেমন কাজ করছে রাজ্য, তা খতিয়ে দেখতে বাংলায় এসেছিলেন দেশের চিফ কমিশনার ফর পার্সনস্ উইথ ডিসেবিলিটিজ (সিসিপিডি) কমলেশকুমার পাণ্ডে। দু’দিনের সফরে দফতরের অফিসার, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, বিভিন্ন সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। কথা বলেন কিছু নিজস্ব সূত্রের সঙ্গেও। বুধবার দিল্লি ফেরার আগে রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন নিয়েও কেন্দ্রের সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগ আনলেন কমলেশ। ‌যা অবশ্য অস্বীকার করেছেন রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা।

Advertisement

মুখ্য প্রতিবন্ধী কমিশনারের অভিযোগ, প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে রাজ্য অনেক ক্ষেত্রেই যা যা করা উচিত, তা করেনি। গত দু’দিনে বিভিন্ন বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করেছে কেন্দ্রীয় দল। কমলেশের অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে দেয়নি সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘শুনেছি ডেঙ্গি নিয়েও সরকার নিজের দায় এড়াচ্ছে। প্রতিবন্ধীদের প্রতি দায়িত্ব পালনেও একই মনোভাব দেখা যাচ্ছে।’’

কমলেশ জানান, বাংলায় ২০ লক্ষ প্রতিবন্ধীর মধ্যে মাত্র ১১ লক্ষ শংসাপত্র পেয়েছেন। শংসাপত্র না পেলে প্রতিবন্ধীরা কোনও সুবিধাই পাবেন না। কমলেশ বলেন, ‘‘অন্য রাজ্যে জেলা হাসপাতালে সপ্তাহে অন্তত এক দিন এই সংক্রান্ত বোর্ড বসে। কিন্তু এখানে শুধু মেডিক্যাল কলেজে বোর্ড বসে মাসে এক দিন।’’ সারা দেশের জন্য একটিই প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র (ইউডিআইডি) দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র। মধ্যপ্রদেশ ১ লক্ষ ৩৯ হাজার পরিচয়পত্র বিলি করেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এমন পরিচয়পত্রের কথা কেউ জানেনই না বলে দাবি করেছেন তিনি। এ ছাড়া, সরকারি অফিস, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজে প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করার প্রকল্প নিয়েছিল কেন্দ্র। কলকাতায় চিহ্নিত ৪২টি বাড়ির মধ্যে ৩৯টিতে তা করাও হয়েছে। কমলেশ জানান, সারা রাজ্যে অন্য সব সরকারি বাড়িতে এই ব্যবস্থার জন্য কেন্দ্র চাইলেই টাকা দিচ্ছে। রাজ্য তিন বছর ধরে সেই টাকা চায়নি।

Advertisement

কমলেশের দাবি, প্রতিবন্ধী সহায়ক ওয়েবসাইট তৈরি, কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্র, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী বিষয়ক পড়াশোনার ব্যবস্থা, প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণ দিতে বিশেষ শিক্ষক শিক্ষণের ক্ষেত্রেও রাজ্যে পিছিয়ে। এমনকী বহু রাজ্যে প্রতিবন্ধীদের মাসে আড়াই হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হলেও এ রাজ্য দেয় মাত্র ৭৫০ টাকা।

শশী পাঁজা যদিও পাল্টা বলেছেন, ‘‘ভাতা দেওয়াটাই আমাদের লক্ষ্য নয়। প্রতিবন্ধীদের স্বাবলম্বী করাটাই মূল কথা। সেই কাজ ভালই হয়েছে। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে শংসাপত্র বোর্ডের বদলে ডাক্তারও দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত ক’বছরে যে কাজ হয়েছে, তা আগে কখনও হয়নি। কীসের ভিত্তিতে উনি এমন অভিযোগ করলেন বুঝছি না।’’ তাঁর অভিযোগের ভিত্তি মুখ্যসচিবকেই লিখবেন বলে জানান মুখ্য প্রতিবন্ধী কমিশনার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement