খড়্গপুর ২ ব্লকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে তৃণমূলের মিছিল। নিজস্ব চিত্র
ভোটের মাঠে না থেকেও লড়াইটা ছিল তাঁদেরই। নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়েও এ বার দ্বৈরথে শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষ।
নয়া এই আইনের বিরোধিতায় গত রবিবার মেদিনীপুরে এসে তৃণমূলের মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু। এ বার আইনের পক্ষে মেদিনীপুরে বিজেপির মিছিলের পুরোভাগে থাকবেন সাংসদ তথা দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কাল, বৃহস্পতিবার বিজেপি-র এই মিছিল হওয়ার কথা।
নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় পথে নেমেছে তৃণমূল। বিজেপি-র পাল্টা মিছিলও শুরু হয়েছে। এ বার লাগাতার কর্মসূচি নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। আজ, বুধবার থেকে দলের ডাকে জেলার বিভিন্ন ব্লক এলাকায় মিছিল, পথসভা হবে। আগামী ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মিছিল, পথসভা চলবে। এই কর্মসূচি হবে একেবারে ওয়ার্ডস্তরে, অঞ্চলস্তরে। মঙ্গলবার মেদিনীপুরে জেলা বিজেপির এক বৈঠকে দলের কর্মীদের পথে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, ব্লকে ব্লকে মিছিল, পথসভা করতে হবে। দলের বক্তব্য, নাগরিকত্ব আইন সংশোধন দীর্ঘ সময়ের দাবি ছিল। মানুষকে নতুন আইনের সুফল বোঝাতে পথে নামা জরুরি।
এ দিনের বৈঠকে জেলা পদাধিকারিদের পাশাপাশি দলের মণ্ডল সভাপতিরাও ছিলেন। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের কথায়, ‘‘নতুন আইনের সুফল মানুষকে বোঝাতেই আমরা মিছিল, পথসভা করছি।’’ তাঁর মতে, ‘‘ভালভাবে বুঝলে কেউই এই আইনের বিরোধিতা করবেন না।’’ এই আইন কেন জরুরি সেই বার্তা দিয়েই দিলীপের নেতৃত্বে মিছিল হবে কাল, বৃহস্পতিবার। মেদিনীপুর শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করবে এই মিছিল। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়েছে মিছিলের প্রস্তুতি। প্রতিটি ওয়ার্ডের কর্মীদের মিছিলে শামিল হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মতো প্রচারও শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার আবার নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় তৃণমূলের মিছিলে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে খড়্গপুর-২ ব্লকের লছমাপুরের কাছে। তৃণমূলের লছমাপুর অঞ্চলের উদ্যোগে উত্তর সিমলা থেকে কাচডিহা পর্যন্ত ওই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। লছমাপুরে জাতীয় সড়ক ধরে মিছিল এগনোর সময় রাস্তার একটি লেন অবরুদ্ধ হয়ে যায়। কলকাতা-মুম্বই জাতীয় সড়কে যানজট তৈরি হয়।
তৃণমূলের মিছিলে যানজট ও দুর্ভোগের বিরোধিতায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। তবে তৃণমূলের উদ্যোগেই জাতীয় সড়কের অন্য লেন দিয়ে গাড়িযাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। এ দিন মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তৃষিত মাইতি প্রমুখ। খড়্গপুরেও এনআরসি ও সিএএ-এর বিরুদ্ধে পথে নেমেছিল তৃণমূলের শহর কমিটি। নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে-সহ শহরের নেতারা। মথুরাকাটি থেকে শুরু হয়ে মিছিল শেষ হয় নিউ সেটলমেন্টে। এ দিন গড়বেতাতেও বড় মিছিল করে তৃণমূল। নতুন হাট থেকে মিছিল শুরু হয়ে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে সত্যনারায়ণ মোড় ঘুরে হাইস্কুল পাড়া, বিবেক রোড ধরে ফের নতুন হাটেই এসেই শেষ হয়। ছিলেন বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী, জেলা নেতা রমাপ্রসাদ তেওয়ারি প্রমুখ। বিকেলে গোয়ালতোড়েও মিছিল বেরোয়। নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় এ দিন কেশপুরের মুগবসানে তৃণমূলের মিছিল শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কুশপুতুল পোড়ানো হয়। রাস্তায় কুশপুতুল পোড়ানোর জেরে যান চলাচল কিছুক্ষণের জন্য ব্যাহত হয়েছে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিতের অবশ্য দাবি, “আমরা কোথাও রাস্তা অবরোধ, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করব না। আর কেশপুরের বিষয়টি খোঁজ নেবো। মানুষকে সমস্যায় ফেলে কোথাও প্রতিবাদ আন্দোলন করা যাবে না।’’