অনুব্রত মণ্ডল এবং দিলীপ ঘোষ ।
অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে ‘ভয়ে’র কথা এর আগে জানিয়েছিলেন বাংলার এক বিজেপি বিধায়ক। তবে এ বার স্বয়ং বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও জানালেন তিনি ‘উদ্বিগ্ন’। তাঁর ধারণা, বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে কেউ প্রাণে মেরে দিতে পারে। তাই কেষ্টকে (অনুব্রতকে এই নামেই ডাকেন তাঁর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) তাঁর পরামর্শ, ‘‘জেলই ওঁর জন্য তূলনামূলক ভাবে নিরাপদ। তাই সুযোগ পেলে তার সদ্ব্যবহার করা উচিত।’’ যদিও দিলীপের এই দাবির প্রেক্ষিতে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘রোজ খবরে থাকতেই ওঁকে এ সব বলতে হয়। কিন্তু এ কথা ওঁর মুখে মানায় না।’’
সোমবার সকালে কলকাতা থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন দিলীপ। বিমানবন্দকে অনুব্রতকে নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে শনিবারই সিবিআইয়ের জোড়া ডাক উপেক্ষা করেছেন অনুব্রত। তবে তাঁকে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পরামর্শ, ‘‘সিবিআই এড়াবেন না, জেলে নিয়ে গেলে ঢুকে পড়ুন, বাইরে থাকলে মেরে দেবে।’’
গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের তলব সাতবার এড়িয়েছেন অনুব্রত। এ বিষয়ে তাঁর দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনিও বলেছিলেন, ‘‘আমি এড়ানোয় বিশ্বাস করি না। আমি নিজে সিবিআইকে এড়াইনি। যতবার ডেকেছে হাজির থেকেছি। তবে ওঁর (অনুব্রত) কথা বলতে পারব না।’’ সোমবার দিলীপ অবশ্য অনুব্রতর সিবিআই এড়ানো প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘হয়তো উনি অনেককিছু জানেন। হয়তো জানেন বলেই ওঁঁকে সিবিআইয়ের কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। হয়তো অনেক বড় নেতার পর্দা ফাঁস করে দিতে পারেন উনি।’’ এমনই একাধিক সম্ভাবনার কথা জানিয় দিলীপ ঘোষ বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, অনুব্রত তৃণমূলের বিপদ হয়ে উঠতে পারেন। কতটা বিপদ? তা বোঝাতে দিলীপ এ কথাও বলেন, ‘‘ভাইপো-র সত্যি সামনে আসতে পারে।’’
এই সব সম্ভাবনার কথা জানিয়েই অনুব্রতকে সতর্ক করে দিলীপ বলেছেন, ‘‘রাজাকে বাঁচাতে মন্ত্রীকে মারতে পারে। তাই ওঁর উচিত জেলে নিয়ে গেলে জেলেই থাকা। বাইরে থাকলে বিপদ বাড়তে পারে। কারণ যার কাছে তথ্য থাকে তার অপমৃত্যু হতে পারে।’’
তবে দিলীপের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনার বক্তব্য, দিলীপের কথার কোনও ভিত্তি নেই। ওঁকে আসলে রোজ খবরে থাকতেই এমন নানা কথা বলতে হয়। অন্য দিকে, বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী কিছুটা দিলীপের কথা সমর্থন করেই জানিয়েছেন, সিবিআই-ই বা অনুব্রতকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে জেরা করছে না কেন। যদি চিদম্বরমের মতো বড় মাপের নেতার বাড়িতে তারা হানা দিতে পারে তবে অনুব্রতকে নয় কেন? সুজন অবশ্য বিষয়টিকে মোদী-মমতা বোঝাপড়া বলেও মন্তব্য করেছেন।