দিলীপ ঘোষ—ফাইল চিত্র
যে সব কথা বলার জন্য গত কয়েক দিন ধরে কার্যত মুখিয়ে ছিল বিজেপি, বৃহস্পতিবার অবশেষে সেগুলি বলেই ফেললেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে এ দিন বিস্তর অভিযোগ তুলেছেন তিনি। যার সারাংশ, কেন্দ্র রাজ্যকে করোনা-যুদ্ধে অনেক টাকা দিলেও তা হয় চুরি হয়ে যাচ্ছে, নয়তো অন্য কোনও প্রয়োজনে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। তৃণমূল অবশ্য দিলীপবাবুর এই অভিযোগে সঙ্কীর্ণ রাজনীতিই দেখছে। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই সঙ্কটকালে রাজনীতি সরিয়ে রেখে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই যে প্রধান কাজ, সেটাই দিলীপবাবু জানেন না।’’
দিলীপবাবুর অভিযোগ, রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে বেশিরভাগ ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্য়কর্মীরা পিপিই পাচ্ছেন না। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তাঁরা সংক্রমিত হলে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। দিলীপবাবুর আরও অভিযোগ, কেন্দ্র পরিবারপিছু ১৯ কেজি করে চাল বিনামূল্যে দিলেও রাজ্য মানুষকে দিচ্ছে অনেক কম চাল। তা-ও দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলের স্টিকার লাগিয়ে। করোনা-যুদ্ধে রাজ্য যে কেন্দ্রের থেকে অর্থসাহায্য চেয়েছে, তা নিয়েও কটাক্ষ করেন দিলীপবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘অন্য কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এ রকম ভিখারির মতো টাকা চাইছেন না। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এসটিআরএফ-এ কেন্দ্র রাজ্যকে ৬৫০ কোটি টাকা দিয়েছে। সেই টাকা কোথায় গেল? কেন্দ্রের টাকায় কি ভোটের প্রস্তুতি হবে?’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যগুলির সঙ্গে সহযোগিতার কথা বললেও বিজেপি নেতারা কেন রাজ্যের করোনা তহবিলে দান করছেন না বা অন্য কোনও সাহায্যে এগিয়ে আসছেন না? এ প্রশ্নের সদুত্তর এড়িয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমাদের সাংসরা সাংসদ তহবিল থেকে নিজেদের লোকসভা কেন্দ্রে টাকা দিয়েছেন করোনা মোকাবিলার জন্যই। কোনও একটা সরকারি তহবিলে টাকা দিলেই হল।’’ করোনায় সঙ্কটে পড়া মানুষের স্বার্থে রাজ্য যে প্রকল্প ঘোষণা করেছে, তা মানতেই চাননি দিলীপবাবু। তিনি একগুঁয়ে ভাবে বলে যান, ‘‘কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে। রাজ্য তা করোনা মোকাবিলায় ঠিকমতো ব্যবহার করছে না।’’
তৃণমূলের তরফে পার্থবাবুর পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য যখন প্রতিরোধের চেষ্টা করছে, তখন দিলীপবাবু এমন রাজনৈতিক মন্তব্য নিয়ে কোথা থেকে উড়ে এলেন? টাকা যারা দেয়, তারা হিসেবও নেয়। আর যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় প্রাপ্য টাকা চাওয়া যদি ভিক্ষা হয়, তা হলে এমন ভিখারিণীকেই মানুষ মুখ্যমন্ত্রী চাইবেন।’’