নিউ দিঘায় দিলীপ ঘোষ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দিঘায় এসে রাস্তার ধারের দোকানে গিয়ে চা বানিয়েছিলেন।
এ বার বিজেপির রাজ্য সভাপতিও সৈকত শহরে এসে জনসংযোগে হাতে তুলে নিলেন চায়ের কাপ।
প্রশাসনিক সফরে দিঘায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সটান চা দোকানে ঢুকে পড়ার পরে সাত দিনও কাটেনি। ইতিমধ্যে সোমবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিঘার সৈকতে চায়ের আড্ডায় হাজির হয়ে যান। রাজ্য জুড়ে এখন তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি চলছে। বিজেপিও সম্প্রতি ‘চা-চক্রে দিলীপদা’ কর্মসূচির ঘোষণা করেন। ৩ সেপ্টেম্বর নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে ওই কর্মসূচি আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হবে। তার আগেই এ দিন কার্যত চায়ের আড্ডায় একপ্রস্থ জনসংযোগ সেরে ফেলেন দিলীপ। যা দেখে বিজেপির স্থানীয় নেতাদের মন্তব্য, ‘‘দিলীপদা যেখানে যান, চা-চক্র শুরু হয়ে যায়।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন ভোরে ওল্ড দিঘার সৈকতে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন দিলীপ। তখনই একটি চা দোকানে যান। সেখানে হাজির পর্যটক এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে বসে চা-বিস্কুট খান। ততক্ষণে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতিকে ঘিরে হইচই পড়ে যায়। দিলীপ ঘোষ এসেছেন শুনে আশেপাশের অনেকেই পৌঁছে যান সৈকতে। স্থানীয়দের কেউ কেউ এলাকার সমস্যাও জানান। এক আইক্রিম বিক্রেতা যেমন অভিযোগ করেন যে, পুলিশ তাঁকে ব্যবসা করতে বাধা দিচ্ছে। কেউ কেউ আবার অভিযোগ করেন, দিঘায় উন্নয়নের নামে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করা হচ্ছে। দিলীপ তাঁদের আশ্বস্ত করেন।
দিঘার যে জগন্নাথ মন্দির পুরীর ধাঁচে নতুন করে গড়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, এ দিন সেই মন্দিরেও গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। রবিবারই তমলুকে সরকারি ভাবে মন্দির গড়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন দিলীপ। এ দিন রামনগর-১ ব্লকের মীরগোদায় এক সভাতেও ফের ওই মন্দির প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। তৃণমূলকে নিশানা করে বলেন, ‘‘আসলে তৃণমূলের লোকেরা এত কাটমানি নিয়েছেন যে, মাটি খুঁড়েও লুকিয়ে রাখতে পারছেন না। তাই সেই টাকায় ওরা মন্দির বানাচ্ছে। কিন্তু জগন্নাথদেব পাপের টাকায় তৈরি মন্দিরে থাকবেন না।’’
‘অধিকারী গড়’-এ দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে ‘হুমকি’ দিতেও ছাড়েননি তিনি। দিলীপের মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের অবস্থা কালসাপের মতো হয়ে গিয়েছে। কোমর ভেঙে গিয়ে এখন শুধু লেজ নিয়ে ছটফট করছে।’’ পাশাপাশি তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘এলাকায় যাঁরা অত্যাচার করছেন, তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করে রাখুন। পুজোর পরে অপারেশন শুরু হয়ে যাবে। কাউকে ছাড়ব না।’’
দিলীপের ‘হুমকি’কে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। দলের জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘উনি যেটা ভাল মনে করেছেন সেটাই বলেছেন। যথা সময়ে আমরা এর যোগ্য জবাব দেব।’’