নরসিংহপুরের অনুষ্ঠানে।
দিন দু’য়েক আগেই জেলায় এসে রেলশহরের গুরুত্ব বুঝিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। তার পরে রাজ্যে এসে হামলার মুখে পড়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। এ বার জেলায় এসে রেলশহর পুনর্দখলের বার্তা দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তুললেন নড্ডার কনভয়ে ইটবৃষ্টির প্রসঙ্গ। ডায়মন্ড হারবার এলাকার দুই তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লা ও গিয়াসুদ্দিন মোল্লার নাম ধরে বলেন, ‘‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি, ওখানেই সভা করে বলে আসব, ভোট পর্যন্ত পৌঁছতে দেব না। তার আগেই একটু টাচ করে দেব তোমাদের।”
শুক্রবার নিজের ‘তালুক’ রেলশহর খড়্গপুরের ঝাপেটাপুরে এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। এ দিন ওই এলাকায় বিজেপির শহর দক্ষিণ মণ্ডলের একটি কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন তিনি। এরপরে ওই এলাকাতেই একটি সভায় যোগ দেন তিনি। গত সোমবার জেলায় জনসভা করে তৃণমূলনেত্রী বুঝিয়ে দিয়েছিলেন রেলশহর তাঁর কাছে ‘পাখির চোখ’। তবে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে হাতিয়ার করে শহরের বিধানসভা পুনরুদ্ধারে যে তিনিও সক্রিয় তা এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন দিলীপও। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “আমি শুনলাম খড়্গপুরে ওঁদের দুই নেতার মধ্যে লড়াই হয়েছে। আগে এখানে মাফিয়ারা লড়ত। এখন নেতারা লড়ছে। খড়্গপুরের সংস্কৃতিকে পাল্টানোর জন্য এখানে আমি এসেছিলাম। আমি কথা দিচ্ছি যেদিন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার আসবে সে দিন খড়্গপুরে বোমা বন্দুকের আওয়াজ হতে দেব না।” দিলীপের সংযোজন, “খড়্গপুরের মানুষ শান্তিতে থাকতে চায় তাই বিজেপিকে জিতিয়েছে। আর বিজেপি যেখানে জেতে সেখানে কোনও অশান্তি-গুণ্ডামি চলে না।” যদিও বিষয়টি নিয়ে খড়্গপুরের বিধায়ক তথা তৃণমূলে জেলা কো-অর্ডিনেটর প্রদীপ সরকার বলেন, “দিলীপ ঘোষ আগে নিজের দলকে সামলান। খড়্গপুরের রেলের এলাকায় কেন মানুষ এখনও বিদ্যুৎ পায়নি সেই জবাব দিন। তার পরে জয়ের স্বপ্ন দেখবেন। আমরা দিদির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করছি। মানুষ আমাদের পাশে আছে।’’ তৃণমূল নেতৃত্বের পাশাপাশি রুটিনমাফিক পুলিশকেও বিঁধেছেন দিলীপ। পরে আশা প্রকাশ করেছেন, বিগত দিনের মতো খড়্গপুরের মানুষ ভোট দিয়ে তাঁদের জেতাবে।
এ দিন নারায়ণগড় ও দাঁতনেও একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। নারায়ণগড়ের বাঁশচাটি এলাকায় গৃহ সম্পর্ক অভিযানে যান। কয়েকদিন আগে ওই এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ করেছিল বিজেপি। এ দিন সেখানে গিয়ে ‘আক্রান্ত’ কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। পরে দাঁতন ২ ব্লকের সাউরিতে বস্ত্রদান ও নরসিংহপুরে সাংসদ তহবিল থেকে নির্মিত সৌর বাতি স্তম্ভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দাঁতনের হরিপুরের দুগ্ধপণ্ডা ময়দানে সভা করেন। প্রায় সব জায়গাতেই মুখ্যমন্ত্রী, তৃণমূল নেতা-কর্মী ও পুলিশকে একযোগে আক্রমণ করেন। তাঁর নিশানা থেকে বাদ যাননি যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ও। দিলীপের বিরুদ্ধে পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূলও। জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, ‘‘দিলীপ ঘোষের মতো নিচে নামতে পারব না। আমরা প্রস্তুত হচ্ছি সমস্ত অসম্মানের জবাব দেব বিধানসভায় জিতে।’’ নিজস্ব চিত্র