—ফাইল চিত্র।
তিন বিধানসভার উপনির্বাচনে পরাজয়ের পিছনে ‘অভিজ্ঞতার অভাব’ আছে বলে ব্যাখ্যা দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের অভিজ্ঞতা কম বলেই আমরা জিতি, কিন্তু জয় ধরে রাখতে পারি না।’’
ভোটের ফল প্রকাশের দু’দিন পরে শনিবার অবশ্য তাঁর নয়া অভিযোগ, ভোট লুঠও উপনির্বাচনে পরাজয়ের আর একটি কারণ। যদিও ভোটের দিন দিলীপবাবু বা বিজেপির অন্য কোনও নেতা করিমপুর বিধানসভার দলীয় প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারের নিগ্রহের ঘটনা ছাড়া আর কোনও বড় অশান্তির অভিযোগ তোলেননি।
দিলীপবাবু খড়্গপুর (সদর)-এর বিধায়ক থেকে মেদিনীপুরের সাংসদ হয়ে যাওয়ায় ওই আসনে উপনির্বাচন হয়েছে। সেখানেও বিজেপি হারায় দিলীপবাবুর উপরেই তার অনেকটা দায় বর্তায় বলে মনে করছে দলের একাংশ। কিন্তু দিলীপবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমি ওই কেন্দ্রে যা ভোট পেয়েছিলাম, প্রেমচন্দ ঝা তার থেকে ৮-৯ হাজার ভোট কম পেয়েছেন। উপনির্বাচনে এ রকম হয়। অতীতে দেশের অন্যান্য জায়গাতেও উপনির্বাচনে আমাদের পরাজয় হয়েছে। কিন্তু পরে সাধারণ নির্বাচনে আমরাই জিতেছি।’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘খড়্গপুরে ২৭টা বুথে রিগং হয়েছিল। আমরা সেটাকে বিশেষ গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু পরে জেনেছি সাড়ে পাঁচটার পরেও অনেক জায়গায় ভোট লুঠ, সন্ত্রাস হয়েছে। তৃণমূলের লোক বুথে আমাদের এজেন্ট হয়ে বসেছিল। তারা সংঘর্ষ, ভোট লুঠের খবর দেয়নি।’’ তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য দিলীপবাবুর এই ভোট লুঠের তত্ত্বকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকাই হয়। মানুষ যে বিজেপিকে প্রত্যাখান করেছেন, তা ওঁরা বুঝতে পারলেই মঙ্গল।’’ আর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পোলিং বুথে বসার এজেন্ট ঠিক করেন সংশ্লিষ্ট দলের কর্মীরা। সুতরাং, দিলীপবাবুর এই অভিযোগের অর্থ— হয় তাঁর দলের কর্মীরাই এজেন্ট ঠিক করার ক্ষেত্রে অন্তর্ঘাত করেছেন, অথবা, তাঁরা সংগঠনের সহকর্মীদের চেনেনই না। খড়্গপুর (সদর)-এর বিজেপি প্রার্থী প্রেমচন্দকে নিয়ে অবশ্য গোড়া থেকেই দলের একাংশের অসন্তোষ ছিল। ওই কেন্দ্রের কয়েক জন নেতা রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র কাছে তা জানিয়েওছিলেন।
আরও পড়ুন: তারাপীঠে উন্নয়ন করেও অঞ্চলে হার, ক্ষুব্ধ অনুব্রত
হারের প্রাথমিক কাটাছেঁড়া করতে এ দিন বৈঠকে বসেন দিলীপ, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং অন্য সাধারণ সম্পাদকেরা। সূত্রের খবর, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, কালিয়াগঞ্জ, করিমপুর এবং খড়্গপুর (সদর)— তিন কেন্দ্রেই রাজ্য নেতারা গিয়ে কর্মী ও মানুষের সঙ্গে কথা বলে হারের কারণ বোঝার চেষ্টা করবেন। বুথ স্তরের দলীয় রিপোর্ট পরে পাঠানো হবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। সূত্রের খবর, নেতারা আলোচনা করেছেন, লোকসভায় ১৮টি আসন জেতার পরে উপনির্বাচনে কিছুটা শৈথিল্য এসেছিল দলে। তৃণমূলের এনআরসি সংক্রান্ত প্রচার যে প্রভাব ফেলবে, আন্দাজ করা যায়নি তা-ও।