শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং দিলীপ ঘোষ।
দুর্নীতি প্রশ্নে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে তিনি ক্লিন চিট দিচ্ছেন না— স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
তৃণমূল ছেড়ে বুধবার শোভন যখন দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, তখনই কলকাতায় দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের দুর্নীতি নিয়ে আমরাই সরব হয়েছি। মামলা করেছি। আন্দোলন করেছি। শোভনবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে, দল তাঁকে বার করে দেবে।’’
শোভনবাবু এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে বিজেপিতে কম ‘জলঘোলা’ হয়নি। গত কয়েক মাস ধরেই তাঁদের যোগদান নিয়ে বিজেপিতে আলোচনা চলছিল। রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের মধ্যস্থতায় দিলীপবাবু-সহ রাজ্য নেতৃত্বের একাধিক নেতা এবং দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বহু বৈঠক হয় শোভন-বৈশাখীর। কথা হয় রাজ্যের আরএসএস নেতাদের সঙ্গেও।
বিজেপি সূত্রের খবর, এত কিছু সত্ত্বেও তাঁদের যোগদান নিয়ে সবুজ সঙ্কেত দিচ্ছিলেন না দিলীপবাবু। এ দিন রাজ্য সভাপতি স্বয়ং সে কথা স্বীকার করেছেন। সূত্রের খবর, দিলীপবাবু এবং দলের একাধিক ‘আদি’ নেতার বক্তব্য ছিল, শোভনবাবুর বিরুদ্ধে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ আছে। ফলে তাঁকে নিলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। বিজেপি কর্মীদের মনোবলও ভাঙবে।
তবে একই সঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি জানিয়েছেন, শোভনবাবুকে দলে নেওয়ার জন্য দিল্লির বহু নেতা একাধিকবার সওয়াল করেছেন। সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহও নির্দেশ দিয়েছেন, আপাতত আর সব কিছু ভুলে রাজ্যে দল বাড়াতে হবে। সে কারণেই শেষ পর্যন্ত শোভনবাবুর যোগদানে সম্মত হন তিনি।
দিলীপবাবু মানেন যে, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার জন্য এখনও বিজেপির যথেষ্ট নেতা-কর্মী নেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দলের সংগঠন দুর্বল। কলকাতাতেও সংগঠন খুব শক্তিশালী নয়। ফলে সেখানে শোভনবাবুর মতো ‘পোড় খাওয়া’ রাজনীতিক এলে সংগঠন মজবুত হবে। তাঁর কথায়, ‘‘লোকসভা ভোটে আমরা ২৩টি আসন পাব ভেবেছিলাম। পেয়েছি ১৮টি। একটু কম। ফলে অন্য দল থেকে লোক নিতেই হবে। শূন্যস্থান ভরে গেলে আমরা অন্য দল থেকে অভিযুক্তদের নেওয়া বন্ধ করে দেব।’’
কলকাতায় আগামী পুরসভা ভোটে শোভনবাবুকে কি মেয়র হিসেবে তুলে ধরবে বিজেপি? দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘এখনই সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। শোভনবাবুকে এমন কোনও প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়নি।’’
সূত্রের খবর, এ দিন দিল্লি গিয়ে শোভন-বৈশাখীকে দলে যোগ দেওয়ানোর জন্য দিলীপবাবুকেই ডেকেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু দিলীপবাবু জানিয়ে দেন তিনি যেতে পারবেন না। ফলে এ দিন সকালে মুকুল রায়কে জরুরি তলব করা হয়।