বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও শিশির অধিকারী। ফাইল চিত্র।
সাংসদ শিশির অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে মানতে নারাজ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মুকুল রায় তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার পরে তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগ করার দাবিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের দ্বারস্থ হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ ৫০ জন বিজেপি সাংসদ। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া দুই সাংসদ শিশিরবাবু এবং সুনীল মণ্ডলের ক্ষেত্রেই বা ওই আইন প্রযুক্ত হবে না কেন? শিশিরবাবু এবং শুভেন্দুর ভাইয়ের দল বদল সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার দিলীপবাবু বলেন, ‘‘তাঁরা কোথাও দলে যোগ দিয়েছেন বলে আমার তো জানা নেই। কেউ কাউকে কোনও বিষয়ে সমর্থন করতেই পারেন। কিন্তু তাঁরা আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন, আমাদের মঞ্চে ভাষণ দিয়েছেন, এমন আমার জানা নেই। যদি করে থাকেন, তা হলে যাঁদের কাছে তার তথ্যপ্রমাণ আছে, তাঁরা উপযুক্ত জায়গায় জানান।’’
তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিধানসভা ভোটের প্রচার পর্বে গত ২১ মার্চ এগরায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় শিশিরবাবুকে প্রথম বিজেপির মঞ্চে দেখা যায়। ২৪ মার্চ কাঁথিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী সভাতেও তিনি যোগ দেন। দু’টি সভাতেই বক্তৃতা করে বিজেপিকে জেতানোর আহ্বান জানান শিশিরবাবু। ওই পর্বে কাঁথিতে বিজেপি প্রার্থীদের বেশ কয়েকটি নির্বাচনী প্রচারেও ছিলেন তিনি।
দিলীপবাবুর এ দিনের মন্তব্যে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি শিশিরবাবু। তিনি শুধু বলেন, ‘‘দিলীপবাবু কী বলেছেন, আমি শুনিনি। আমি প্রতিক্রিয়াও দেব না। আমার কিছু বলার থাকলে দিল্লিতে জানাব।’’
এ দিকে, বিধানসভা ভোটের আগে অন্য দল থেকে বহু বিধায়ককে বিজেপিতে যোগদান করানোর পর এ দিন দিলীপবাবু মন্তব্য করেন, ‘‘দলত্যাগ বিরোধী আইন সংসদে পাশ হয়েছে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে। গত বছর যখন সিপিএম-কংগ্রেস থেকে অনেক বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন, তখন মামলা হয়েছিল। কিন্তু বিধানসভার স্পিকার সহযোগিতা করেননি। বহু বিধায়ক তৃণমূল এবং অন্য দল থেকে ব্যাপক সংখ্যায় যে আমাদের দলে এসেছেন, তারও কোনও তদন্ত হয়নি। একটি দলের প্রতীকে দাঁড়িয়ে বহু মানুষের সমর্থন পেয়ে জিতে অন্য দলে চলে যাওয়া ঠিক নয়। তাই দলত্যাগ বিরোধী আইনের ব্যবহার হওয়া উচিত।’’ মুকুলবাবুরও বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে দিলীপবাবু মত প্রকাশ করেন। ভোটের আগে যাঁরা বিধায়ক থেকেই অন্য দল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের ব্যাপারে তাঁর অভিমত কী? দিলীপবাবু বলেন, ‘‘তাঁরা ভোটের আগে শেষ মুহূর্তে দল বদল করেছিলেন। তবে আমি মনে করি, আইন সকলের ক্ষেত্রেই সমান ভাবে প্রয়োগ করা উচিত।’’