মেদিনীপুর শহরে দিলীপ ঘোষ। রবিবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর আগামী রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জোর জল্পনা রয়েছে। ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে সমাবেশের ডাক দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করলেন, তৃণমূলে যে কোনও সময়ে বিস্ফোরণ হবে!
রবিবার মেদিনীপুরে এসে দিলীপ বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রী বিভিন্ন বক্তব্য রাখছেন। সমাজে সে নিয়ে চর্চাও হচ্ছে। ওই পার্টিটাতে কোনও ভদ্রলোক আর থাকতে পারবে না। যে পরিস্থিতি হয়েছে তাতে ওই পার্টিটাই উঠে যাবে। যে কোনও সময়ে বিস্ফোরণ হবে! পুরো পার্টিটা ভেঙে পড়বে। সে দিকেই গতিপ্রকৃতি যাচ্ছে।’’ পাল্টা জবাব এসেছে তৃণমূল থেকেও। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির মন্তব্য, ‘‘বিজেপির মতো ঠুনকো ধাতু দিয়ে তৃণমূল তৈরি নয়। অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দলটা গড়ে উঠেছে। তৃণমূল ভাঙবে না। উনিই ভেঙে পড়বেন।’’
চলতি সপ্তাহে রাজ্য সফরে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জল্পনা রয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তৃণমূলের একাধিক নেতা বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন। দিলীপ অবশ্য জানিয়েছেন, ওই সময়ে যোগদানের কোনও কর্মসূচি নেই। অমিত শাহের উপস্থিতিতে কেউ বা কারা কি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন? দিলীপের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘ওঁর সামনে যোগদানের কোনও কার্যক্রম নেই। তবে যোগদান নিয়মিত চলছে। ৩ তারিখ আমি বিষ্ণুপুরে যাব। সেখানে ব্যাপক যোগদান হবে। ৪ তারিখ চন্দ্রকোনায় যোগদান হবে। ৭ কিংবা ৮ তারিখ তমলুকে যোগদান হবে। এখন মূলত যোগদান মেলাই আমরা করছি।’’ কোনও মন্ত্রী, বিধায়কের বিজেপিতে আসার সম্ভাবনা রয়েছে? দিলীপের কৌশলী জবাব, ‘‘আপাতত মন্ত্রীর কথা জানা নেই। তবে বিধায়কেরা যোগাযোগ করেছেন। আমরা তাঁদের বলেছি, আপনারা প্রস্তুতি নিন। যে দিন আসবেন, আমরা আপনাদেরকে গ্রহণ করব। যে কোনও সময়ে এটা হতে পারে।’’
আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রবিবার মেদিনীপুরে বিজেপির এক সাংগঠনিক বৈঠক হয়েছে। মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ছাড়াও ছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেনন, দলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শমিত দাশ প্রমুখ। ঠিক ছিল, রাজ্য সফরে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একদিন মেদিনীপুরেও আসবেন। শহরে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে থাকবেন তিনি। পরে ঠিক হয়েছে, বৈঠকটি পাশের জেলা বাঁকুড়ায় হবে। রবিবার দিলীপ বলেন, ‘‘অমিত শাহের বৈঠক মেদিনীপুরে হচ্ছে না। দু’টো জোন মিলিয়ে বাঁকুড়ায় হচ্ছে। আমাদের সর্বভারতীয় কার্যকর্তারা আজ ওখানে গিয়েছেন। পরিদর্শন করে বৈঠকস্থল চূড়ান্ত করবেন।’’
মেদিনীপুরে এসে পুলিশ- প্রশাসনের বিরুদ্ধেও সরব হন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ- প্রশাসনের লোকেরা একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীর মতো আচরণ করছেন। আমি এখানকার সাংসদ। দেড় বছর হয়ে গেল। এখানকার জেলাশাসক আমার সঙ্গে দেখা করেননি। কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে আমাদের ডাকা হয় না।’’