—ফাইল চিত্র।
সোমবার বেলা ১টা ৫০।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন মিছিল চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ দিয়ে এগিয়ে চলছে। ডান দিকে রাজ্য বিজেপির সদর দফতর ৬, মুরলীধর সেন লেন। ওই গলির সামনে এবং পিছনে দু’টি রাস্তাই গার্ডরেল এবং দড়ি দিয়ে ঘেরা। কয়েক জন পদস্থ আধিকারিকের নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশের বড় বাহিনী বিজেপির রাজ্য দফতরের নিরাপত্তার দায়িত্বে। এর মধ্যেই ওই রাস্তার মুখে ফ্লেক্সের তোরণ লক্ষ্য করে কয়েক পাটি জুতো উড়ে যেতে দেখা গেল। তৃণমূল নেত্রী অবশ্য তত ক্ষণে বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছুটে যান স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। তৎপর হয় পুলিশ। বয়স্করা মিছিলের ছেলেদের ঠেলে দূরে সরিয়ে দিতে থাকেন।
বিজেপির রাজ্য দফতরে অবশ্য় তখন জনাকয়েক কর্মী ছাড়া কেউই ছিলেন না। কোনও অশান্তিও হয়নি। তবে দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, মিছিল থেকে তাঁদের অফিস ‘আক্রমণ’ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মমতাকে রাজভবনে ডাক, চিঠি-পাল্টা চিঠি, সঙ্ঘাত চরমে
দুপুর একটা নাগাদ রেড রোডে বাবা সাহেব অম্বেডকরের মূর্তি থেকে মিছিল শুরু করেন মমতা। আড়াইটে নাগাদ জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে শেষ হয় সেই মিছিল। ছ’ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার দু’পাশেও ছিল ভিড়। সেখান থেকে মমতার নামে ‘জিন্দাবাদ’ ধ্বনি ওঠে। করজোড়ে তাঁদের নমস্কার জানাতে জানাতে এগোন তৃণমূল নেত্রী। কখনও হাতও নাড়তে দেখা যায় তাঁকে। মিছিল রাস্তার যে দিক দিয়ে গিয়েছে, তার অন্য দিকের যান চলাচলও বন্ধ রাখা হয় ‘নিরাপত্তা’র কারণে।
বিভিন্ন স্তরের মানুষ এ দিন মমতার মিছিলে পা মেলান। মিছিলের শুরুতে মমতার পাশেই ছিলেন এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী। ছিলেন কয়েক জন ক্রীড়াবিদও। পা মেলান পাহাড়ের ১৫টি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। মিছিলের পথে দু’পাশে দাঁড়ানো মানুষ কোনও ভাবে যাতে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে ঢুকে না পড়েন, তার জন্য আগোগাড়া সক্রিয় ছিল পুলিশ। মিছিলে কোনও ভাবে যাতে বিশৃঙ্খলা না হয়, সে জন্য দলের নেতাদের মিছিলের পরতে পরতে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা। মিছিলের মুখ যখন মেডিক্যাল কলেজের কাছে, শেষ প্রান্ত তখনও চাঁদনি চকে। মিছিল শেষে মমতা বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ মিছিল হয়েছে। কয়েক লক্ষ মানুষ এসেছেন এই মিছিলে।’’