ছবি: পিটিআই।
তৃণমূলের ‘বহিরাগত’ তত্ত্বের জবাবে মুখ খুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যে রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে দলের চার কেন্দ্রীয় নেতা তিন দিনের জন্য রাজ্যে এসেছিলেন। তাঁদের ‘বহিরাগত’ বলে বার বার কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বলেছেন, রাজ্য নেতৃত্বের উপরে ভরসা না থাকায় বিজেপি-র ভোট প্রস্তুতি দেখতে আসছেন ‘বহিরাগত’রা। দিলীপবাবু শনিবার বলেন, ‘‘যাঁরা এখানকার লোকের বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন, তাঁরাই বাইরের লোক, বাইরের লোক বলে চিৎকার করছেন। বাঙালি এত ক্ষুদ্র মনের কখনও ছিল না। বাংলার ৪০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করেন। তাঁদের যদি ওই সব রাজ্য বাইরের লোক বলে ফেরত পাঠিয়ে দেয়, দিদিমণি তাঁদের সকলকে চাকরি এবং সুরক্ষা দিতে পারবেন তো? তাঁদের এই সব মন্তব্যের জন্য দেশের মানুষের মনে পশ্চিমবঙ্গ সর্ম্পকে সন্দেহ ঢুকে যাচ্ছে।’’
দিলীপবাবুর আরও যুক্তি, বাঙালি শুধু বাংলাকে স্বাধীন করার জন্য আন্দোলন করেনি, গোটা দেশের জন্যই স্বাধীনতার লড়াই করেছিল। তৃণমূল অসম, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশে যখন ভোটে লড়ে, তখন তাদের বহিরাগত বলা হয় না। কংগ্রেসের ভিন রাজ্যের নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি তৃণমূলের ভোটে এ রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় সাংসদ হয়েছেন। সে ক্ষেত্রেও ‘বহিরাগত’ প্রশ্ন তোলা হয়নি। তা হলে বিজেপির মতো সর্বভারতীয় দলের রেওয়াজ অনুযায়ী অন্য রাজ্যের নেতা এ রাজ্যে ভোটের কাজে এলে তাঁকে বহিরাগত বলা হবে কেন? দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ কি ভারতের বাইরে যে ভারতের অন্য রাজ্যের লোককে এখানে বহিরাগত বলা হচ্ছে?’’
আরও পড়ুন: প্রার্থীর নাম জানা নেই, জেলায় জেলায় দেওয়াল লিখন শুরু করে দিল বিজেপি
আরও পড়ুন: কাজের ‘স্বাধীনতা’ চান ক্ষুব্ধ শুভেন্দু, আগামী সপ্তাহে ফের আলোচনায় সৌগত
বিজেপি বাংলার ‘স্বার্থবিরোধী’, দলের এই প্রচারকে জোরদার করতে তৃণমূল অবশ্য ‘বহিরাগত’ তত্ত্বে অনড়। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এ দিনও বলেন, ‘‘বাংলার শিক্ষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের নিরিখে যা আমদানি করার চেষ্টা চলছে তা তো বহিরাগতই। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে বিজেপি তা প্রমাণ করে দিয়েছে। আর এখন তো রাজ্য দখল করতে বাইরে থেকে দলে দলে নেতা আনতে হচ্ছে!’’ দিলীপবাবু এ দিন ফের বলেন, ‘‘বাংলাকে আমরা গুজরাত অবশ্যই বানাব। গুজরাত শিল্প, মাথাপিছু গড় আয়, আইনশৃঙ্খলা, নারী সুরক্ষা সব দিক থেকেই এগিয়ে আছে। তা হলে বাংলাকে গুজরাত বানালে আপত্তি কীসের?’’ তাঁর আরও কটাক্ষ, ‘‘গুজরাত মানে দাঙ্গা এই সব ভয় যারা দেখিয়েছিল, সেই বামপন্থীরা লোকভায় বউনি করতে পারেনি।’’ এ দিন বিজেপির রাজ্য দফতরে দিলীপবাবুর নেতৃত্বে তাঁদের দলে যোগ দেন পূর্ব মেদিনীপুরের অনেকে।