অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
এ বার পুজোয় দুয়ারে উপহার কর্মসূচি নিয়ে হাজির অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের মানুষকে পুজোর উপহার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। গত বছর পর্যন্ত পুজোর আগে ‘অভিষেকের উপহার’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হত ডায়মন্ডহারবার লোকসভার অধীন সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে। যেখানে সাংসদ স্বয়ং উপস্থিত হয়ে পুজোর উপহার তুলে দিতেন আমজনতার হাতে। কিন্তু উপহার দেওয়ার এই পদ্ধতিতে এ বার বদল আনা হয়েছে। সাংসদ অভিষেকের নির্দেশ, দলের স্থানীয় নেতারা ডায়মন্ডহারবার এলাকার সাধারণ মানুষের বাড়ি গিয়ে উপহার পৌঁছে দিয়ে আসবেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, রবিবার থেকে সেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন ডায়মন্ডহারবার লোকসভা এলাকার অধীন তৃণমূল নেতারা। ২ অক্টোবর মহালয়ায় দেবীপক্ষের সূচনা হবে। তার আগে অভিষেকের উপহার আমজনতার কাছে পৌঁছে দিতে চান এলাকার তৃণমূল নেতারা।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, ডায়মন্ডহারবার লোকসভা এলাকার বুথের দায়িত্বে থাকা নেতাদের উপহার পৌঁছে দিতে হবে সাধারণ মানুষের কাছে। সাংসদ অভিষেকের দফতর থেকে বিধানসভাভিত্তিক উপহার পৌঁছে যাবে প্রত্যেক বুথে বুথে। তার পর বুথের দায়িত্বে থাকা নেতারা নিজেদের সুবিধা মতো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেই উপহার পৌঁছে দেবেন সাধারণ মানুষের দুয়ারে। ফলতা এলাকার এক তৃণমূল নেতা জানাচ্ছেন, ৭ লক্ষ ১০ হাজার ভোটে জয়ী হয়ে তৃতীয় বারের জন্য সাংসদ হওয়ার পর জুন মাসে আমতলার দলীয় কার্যালয়ে ভোটারদের ধন্যবাদ জানাতে বৈঠক করেছিলেন অভিষেক। সেই বৈঠকেই ভোটারদের ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে, তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, নেতাদের থেকে মঞ্চের উপরে কেন উপহার নেবেন সাধারণ মানুষ? বহু ক্ষেত্রে নেতারা উপহার দেওয়ার মুহূর্তের ছবি তুলে তা প্রকাশ্যে ছড়িয়ে দেন। যা না-পসন্দ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের। তাঁর আরও বক্তব্য ছিল, যদি উপহার দিতেই হয়, তা হলে তা পৌঁছে দিতে হবে সাধারণ মানুষের বাড়ি গিয়ে। তার পরেই এ বছর পুজোর উপহার ভিন্ন আঙ্গিকে দেওয়া হবে বলে মনস্থির করেন অভিষেক। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ বছর সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উপহার পৌঁছে দিচ্ছেন ডায়মন্ডহারবার লোকসভা এলাকার বুথ স্তরের তৃণমূল নেতারা।
বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তথা পরিবহণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘সাংসদ আমাদের যে ভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা সে ভাবে উপহার দেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছি। এ বছর বুথ স্তরের নেতারা সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উপহার পৌঁছে দিয়ে আসবেন। তাই এলাকার বিধায়ক হলেও আমরাও কোনও উপহার দেওয়ার জন্য প্রকাশ্যে অনুষ্ঠান করছি না। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পরই সাংসদের উপহার আমজনতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছি। আশা করছি সেপ্টেম্বর মাস শেষ হওয়ার আগেই আমরা পুজোর উপহার সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারব।’’ সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার এই উদ্যোগ অভিষেকের প্রথম নয়। করোনা সংক্রমণের সময় যে লকডাউন জারি করা হয়েছিল, তাতে ডায়মন্ডহারবার এলাকার মানুষের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছিল সাংসদের অফিস।