২০১৩-১৪ আর্থিক বছর শেষ হতে হাতে গোনা কয়েকটা দিন বাকি। কিন্তু বিল পাস করানোর ক্ষেত্রে হয়রানির অভিযোগ উঠছে আরামবাগ ট্রেজারি দফতরের এক শ্রেণির অফিসার এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে। আরামবাগের একাধিক বিডিওর কাছ থেকে এ ধরনের অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে মহকুমা প্রশাসনও। একাধিক বিডিও এ বারে মহকুমাশাসকের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানালেও লিখিত অভিযোগ এখনও জমা পড়েনি। মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। বিশেষ নজরদারির চেষ্টা চলছে। কেউ উপঢৌকন চাইলে বিডিওরা যাতে সরাসরি আমাকে জানান, সে বিষয়ে বলা হয়েছে।”
আরামবাগ ট্রেজারি অফিসে গত অক্টোবর মাসে ট্রেজারি অফিসার অবসর নেওয়ার পর ওই পদটি ফাঁকা। অস্থায়ী ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন সহকারি ট্রেজারি অফিসার মৃণালকান্তি হেমব্রম। মহকুমাশাসক জানান, ট্রেজারি অফিসার না থাকায় পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে, এটা বাস্তব। কাজে গতি আনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি ট্রেজারি অফিসারকে বলা হয়েছে। মৃণালকান্তিবাবু বলেন, “সমস্যা কাটানোর চেষ্টা চলছে।”
একাধিক ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, একটি আর্থিক বছরে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ ৩১ মার্চের মধ্যে যথাযথ বিল পেশ করে না তুললে ওই তারিখে রাত ১২টার পরে সেই তহবিল তামাদি হয়ে যায়। বিভিন্ন সরকারি দফতরের ডিডিওদের অভিযোগ, বিল পাস করা নিয়ে অযথা হয়রানি করছেন ট্রেজারি দফতরের কিছু আধিকারিক। খানাকুল ১ বিডিও গোবিন্দ হালদার বলেন, “যে কোনও বিল পাস করা নিয়ে একেবারে যুক্তিহীন আপত্তি তুলছেন কিছু অফিসার।” খানাকুল ২ বিডিও অনুপকুমার হালদারের কথায়, “মিথ্যা হয়রান করে নানান উপঢৌকন দাবি করা হচ্ছে ট্রেজারি অফিস থেকে। তহবিল বণ্টন-সংক্রান্ত নির্দেশিকা তাঁদের অফিসে থাকার কথা। কিন্তু তা আমাদের কাছেই চাওয়া হচ্ছে।” একই রকম অভিযোগ করেছেন গোঘাট ১ বিডিও দেবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, গোঘাট ২ বিডিও শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত, আরামবাগ বিডিও প্রণব সাঙ্গুই, পুড়শুড়া বিডিও অনির্বাণ রায়। বিভিন্ন সরকারি দফতরের ড্রয়িং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসারদের (ডিডিও) আরও অভিযোগ, প্রতিদিন ১০টার বেশি চেক পাস হচ্ছে না। অবসর-সংক্রান্ত বিল বা ঠিকাদারদের বিল পাস হচ্ছে না। টেলিফোনের বিল নিয়ে অযথা দেরি করা হচ্ছে। সরাসরি অফিসারেরা উত্কচ দাবি করছেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে মৃণালকান্তিবাবুর বক্তব্য, “বিল পাস করা নিয়ে আপত্তি তোলার যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্নীতি নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”