হাওড়ায় নতুন পুলিশ মর্গের জন্য জমি চিহ্নিতকরণ থেকে প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল সবই। পূর্বতন তৃণমূল সাংসদ অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করার সুপারিশও করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, তিনি মারা যাওয়ার পরেই তাঁর সুপারিশ করা সব প্রকল্প বাতিল হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে মর্গ তৈরির কাজ। ফলে শহরের মধ্যস্থলে থাকা মর্গটি বেওয়ারিশ লাশের পাহাড় নিয়ে দূষণ ছড়াচ্ছে।
মধ্য হাওড়ার মল্লিকফটক এলাকায় হাওড়া জেলের পাশে ওই মর্গটি নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। ২০ বছর ধরে জেলার অন্যতম প্রধান এই মর্গটির এসি বিকল। অভিযোগ, খারাপ এসি সারানোর কোনও উদ্যোগ জেলা প্রশাসন বা পুরসভা নেয়নি। মৃতদেহ সংরক্ষণ করার ‘ডিপ ফ্রিজ’ নেই। সে কারণে প্রতিদিন গড়ে ৪টি করে আসা বেওয়ারিশ লাশ জমা হলেও সেগুলি সংরক্ষণ হয় না।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে বছর দুয়েক আগে জেলা প্রশাসন নতুন মর্গ তৈরির পরিকল্পনা করে। তৈরি হয় দেড় কোটি টাকার প্রকল্প। হাওড়া জেলের পিছন দিকে জমিও চিহ্নিত করা হয়। মহকুমা শাসকের নেতৃত্বে সেই জমি পরিদর্শনও হয়। সাংসদ তহবিল থেকে দেড় কোটি টাকা অনুমোদন করার জন্য অম্বিকাবাবু সুপারিশ করেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পরেই গোটা প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে হাওড়ার বর্তমান তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রকল্প কেন বাতিল হয়েছে জানি না। আমি আগের কোনও প্রকল্প বাতিল করিনি। আমি বিভিন্ন ক্লাবে মাল্টিজিম করেছি, রাস্তায় আলো বসিয়েছি। কিন্তু মর্গের ব্যাপারে আমাকে কেউ বলেননি। তাই আগের সাংসদের সুপারিশ সম্পর্কে কিছু জানি না।”
প্রসূনবাবু এ কথা বললেও হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, নিয়ম অনুযায়ী, কোনও সাংসদ মারা গেলে তিনি যে প্রকল্পগুলির সুপারিশ করেছিলেন, নতুন সাংসদ ফের সেগুলির সুপারিশ না করলে তা বাতিল হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। আগের সাংসদের সুপারিশ নতুন সাংসদ তুলে ধরেননি।
এ ব্যাপারে হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, “আগে কী হয়েছে জানি না। তবে মর্গটি নিয়ে ভাবা দরকার। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে প্রায় দেড় বছর ধরে দাহ না করায় বেওয়ারিশ লাশের পাহাড় জমে গিয়েছে। সম্প্রতি প্রথম পর্যায়ে ১২০টি লাশ পোড়ানো হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে। জেলাশাসকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে।” জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাস বলেন, “মর্গের জন্য জমি প্রস্তুত রয়েছে। খরচের হিসেবও করা আছে। ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা পেলেই কাজ শুরু হবে।”