আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির প্রার্থী ছাড়া বাকিরা প্রচারের ব্যস্ততা থেকে বেশ খানিকটা সময় হাল্কা থাকলেন রবিবার। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত মহকুমাশাসকের অফিসের প্রেক্ষাগৃহে নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক (সাধারণ) রাজীব শ্রীবাস্তবের প্রার্থীদের বৈঠক ছিল। নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে প্রত্যেক প্রার্থীকে ওয়াকিবহল করেন পর্যবেক্ষক।
কিন্তু সেখানে হাজির ছিলেন না ঝাড়খণ্ড দিশম প্রার্থী গণেশ বাগ। গত বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, প্রচারের কাজে অনেকটা পিছিয়ে যাওয়ায় জোরকদমে গা ঘামাচ্ছেন এখন। সে জন্যই যাননি বৈঠকে। এ দিন সকাল থেকে হরিপালের বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালিয়েছেন তিনি। মহকুমাশাসক অরিন্দম রায় জানালেন, বৈঠকের জন্য প্রার্থীদের চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কেউ না এলে অবশ্য কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। বৈঠকের বিষয়গুলি পরে লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সকলকে।
বাকি চার প্রার্থী সকাল ৮টা থেকে ঘণ্টা দু’তিন প্রচার সেরে মহকুমাশাসকের অফিসে হাজির হন। সিপিএমের শক্তিমোহন মালিক সকালে চন্দ্রকোণা ছুঁয়ে এসে বিকেলে ফের সেখানেই যান। কংগ্রেসের শম্ভুনাথ মালিক সকালে খানাকুলের প্রাচীন ঘণ্টেশ্বর মন্দিরে পুজো দেন। সেখানে গাজনের সন্ন্যাসী ও মানুষের ভিড়ের মধ্যেই প্রচার সেরে নেন তিনি। বিকেলে গোঘাটে গিয়ে কর্মিসভা করেন। বিজেপি প্রার্থী মধুসূদন বাগ সকালে আরামবাগ পুর এলাকায় ঘোরেন। বিকেলে যান গোঘাটের দিকে। আর তৃণমূলের প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার ওরফে আফরিন আলি সকালে প্রচারের সময়ই পাননি। সরাসরি হাজির হন পর্যবেক্ষকের সঙ্গে বৈঠকে। বৈঠক সেরে দুপুরে আরামবাগেই কর্মিসভা করেন তিনি।
গাজন উপলক্ষে তারকেশ্বর মন্দিরে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। সে কথা মাথায় রেখে সোমবার প্রচার নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা করে রেখেছেন বলে জানালেন দিশম প্রার্থী গণেশবাবু। তারকেশ্বর মন্দির এলাকা-সহ পুরসভা এবং বিভিন্ন গ্রামে ঘুরবেন। সিপিএমের শক্তিমোহন মালিক বলেন, “সোমবার পুড়শুড়ায় প্রচারের কথা আছে। ছুটিছাটা নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নেই। প্রতিদিনের মতোই সারাদিন ঘুরে প্রচার হবে।” কংগ্রেসের শম্ভুনাথ মালিক জানালেন, পুড়শুড়া এবং তারকেশ্বরের বাজার-হাটগুলিতে ঘুরবেন। যেখানেই মানুষের সমাগম হবে, ছুটবেন সেখানে। বিজেপি প্রার্থী মধুসূদন বাগ জানান, তিনি মহকুমার চারটি বিধানসভা কেন্দ্রেই চক্কর মারবেন। তৃণমূল প্রার্থী আগামী দু’দিনে কোনও নির্দিষ্ট জায়গায় প্রচার রাখেননি। তবে আজ, সোমবার তারকেশ্বরে আসার ইচ্ছা আছে বলে জানালেন।
এ দিন মহকুমাশাসকের অফিসের প্রেক্ষাগৃহে বৈঠক শুরুর আগে সব প্রার্থীদের নিজেদের মধ্যে আলাপ জমাতে দেখা যায়। প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত এবং বাইরে জমায়েত দর্শকদের কাছে সবচেয়ে কৌতহলী দৃশ্য ছিল, অপরূপা ও তাঁর সামনের চেয়ারে বসে থাকা শক্তিমোহনের কথোপকথনের দৃশ্য। প্রবীন শক্তিমোহনকে ‘দাদা’ ডেকে আলাপ করেন তৃণমূলের নবীন প্রার্থী। শক্তিবাবুও হাসিমুখে পিছন ফিরে কিছু ক্ষণ মৃদু গলায় কথা বলেন অপরূপার সঙ্গে। বাকিদের তত ক্ষণে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়!