চৈত্রের রোদ থেকে বাঁচতে সকাল ৬টাতেই দই-চিঁড়ে খেয়ে কলকাতার পিকনিক গার্ডেনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন কৃষ্ণপদ। সড়ক পথে প্রায় তিন ঘণ্টার পথ পেরিয়ে গোসাবা পৌঁছলেন জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। আগে থেকেই প্রার্থীর জন্য সেখানে অপেক্ষায় দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা। সকলের সঙ্গে প্রচারে কোথায় কোথায় যেতে হবে তা নিয়ে আলোচনা সেরে যখন দলবল নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন ঘড়ির কাঁটা তখন সাড়ে ৯টা ছুঁয়েছে। অনেকটা পথ রিকশা এবং নৌকায় চার চারটে নদী পেরিয়ে যখন ছোট মোল্লাখালিতে পৌঁছলেন ঘড়িতে তখন বেলা ১২টা। মাথার উপরে ঝাঁ ঝাঁ রোদ। কিন্তু ‘কুছ পরোয়া নেই’ ভঙ্গিতে প্রচার শুরু করে দিলেন কৃষ্ণপদ মজুমদার।
তাঁকে দেখতে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজনের উদ্দেশে কপালে হাত উঠল প্রার্থীর। সেখান ছেড়ে কিছুটা এগিয়ে যেতেই পিছন থেকে উঠে এল প্রশ্ন, “উনি কোন কেন্দ্রের।” মিছিলের পিছনে থাকা দলের এক কর্মীর কানে গিয়েছিল কথাটা। পিছিয়ে এসে প্রশ্নকর্তাকে তাঁর উত্তর, “দাদা, জয়নগর কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছেন।” সঙ্গে সঙ্গে ফের প্রশ্ন, “আমাদের এখানে যাতায়াতের সমস্যা অনেক। দাদাকে বলবেন দেখতে।” শুনে মিছিলে ফিরে গেলেন ওই কর্মী। মিছিল একে একে ছুঁয়ে যায় সাতজেলিয়া, রাধানগর, লাহিড়িপুর, কুমিরমারি। এরই মধ্যে এক ফাঁকে দলীয় কর্মীর বাড়িতে ভাত, টক ডাল, পটলের তরকারি দিয়ে প্রার্থী সেরে নিলেন দুপুরের আহার।
সাতজেলিয়া ঘাটে আসতেই প্রার্থীকে এক বাসিন্দার আবেদন, “এখানকার সবচেয়ে বড় সমস্যা নদী বাঁধ। বাম আমলে সমস্যা মেটেনি। তৃণমূল আসার পরে এখনও সমস্যা থেকেই গিয়েছে। আপনারা পারবেন?” “অবশ্যই চেষ্টা করব।” উত্তর ছুড়ে সামনের দিকে হাঁটা দিলেন কৃষ্ণপদ। লাহিড়ীপুরে প্রার্থীকে কয়েকজনের প্রশ্ন, “সবাই ভোটের সময় এখানে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে যান। কিন্তু কাজ কিছু হয় না।” কয়েক জন এগিয়ে বলেন, “দয়া করে পানীয় জল, রাস্তাঘাট আর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটা দেখবেন। এখানে চিকিৎসার তেমন সুযোগই নেই।” ‘আস্থা রাখুন’ বলে এগিয়ে গেলেন প্রার্থী।
প্রচার শেষে রাতে কুমিরমারিতেই থাকার ব্যবস্থা। কেমন বুঝলেন? প্রার্থীর উত্তর, “দেখলেন তো সবই। কেউই সুন্দরবনের মানুষের জন্য কিছু করেনি।”