এলাকারই এক দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল দুই স্কুলছাত্রকে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করতে। আবার এলাকারই একটি বাড়ি থেকে মেলে নিহতের খোয়া যাওয়া মোটরবাইকটি। এই সূত্র ধরেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শালিমার এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় অগ্রবালের খুনের কিনারা করে ফেলল হাওড়া সিটি পুলিশ। আটক করা হয়েছে ওই দুই ছাত্রকে।
পুলিশ জানায়, ফ্ল্যাটের নীচে মোটরবাইক রাখা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সঞ্জয়ের সঙ্গে অশান্তি হচ্ছিল ফ্ল্যাটেরই তিন তলার বাসিন্দা পুষ্পরাজ শর্মার (১৭)। সে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। কয়েক দিন আগে এ নিয়ে তীব্র বচসার সময়ে সঞ্জয় ওই ছাত্রটিকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, এর পর থেকেই বন্ধু ছাত্র অঙ্কিত কুমারকে (১৬) নিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার ছক কষতে শুরু করে পুষ্পরাজ। এ জন্য একটি ছুরিও কিনে আনে।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সঞ্জয় ফেরার পরে সাড়ে ৮টা নাগাদ খুন করার মতলবে তাঁর ফ্ল্যাটে যায় পুষ্পরাজ ও অঙ্কিত। পরিচিত হওয়ায় তাঁদের ঘরে ঢুকতে দেন সঞ্জয়। তখন ফের বাইক রাখা নিয়ে তাঁদের মধ্যে বচসা হয়। সেই চিত্কার শুনতে পেয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। পুলিশ জানায়, কথা বলতে বলতেই ওই দুই ছাত্র ছুরি দিয়ে সঞ্জয়কে আঘাত করে। সঞ্জয় লুটিয়ে পড়তেই তাঁর হাত চেপে ধরে এক জন। অন্য জন এলেপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে পেটে, গলায়, বুকে। সঞ্জয় জ্ঞান হারানোর পরে দু’জন বাথরুমে গিয়ে হাত পা ধুয়ে আলমারি খুলে কিছু টাকা নিয়ে চলে যায়। পরে সঞ্জয়ের বাইকটি নিয়ে তিন-চার কিলোমিটার দূরে একটি বাড়িতে রেখে আসে তারা। এর পরে ওই দুই ছাত্র অন্য এক বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন থেকেই পুষ্পরাজের খোঁজ মিলছে না বলে খবর মেলে। পাশাপাশি জানা যায়, ওই দিন সঞ্জয়ের ফ্ল্যাটে দুই ছাত্র ঢুকেছিল। এর পরে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় রাত ৯টার পরে ওই দুই ছাত্র সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করছে। শনিবার বাইক উদ্ধারের পাশাপাশি শালিমার এলাকারই একটি বাড়ি থেকে পুষ্পরাজ ও অঙ্কিতকে পাওয়া যায়। জেরায় তারা খুনের কথা স্বীকার করে। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (সদর) নিশাত পারভেজ বলেন, “ওই দুই ছাত্রকে আটক করে আরও জেরা করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে বোঝা যাচ্ছে মোটরবাইক রাখা নিয়ে বচসার জেরেই এই খুন।”