রবিবার গোঘাটের কামারপুকুর চটি এলাকায় বিমান বসুর নির্বাচনী সভায় যোগদানের জেরে বিভিন্ন গ্রামে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। একটি ক্ষেত্রে পুইনা গ্রামে দু’দলের সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় দু’দলের ৩ জনকে (২ জন তৃণমূল, ১ জন সিপিএম) আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ জনকে (১ জন তৃণমূল, ৩ জন সিপিএম) গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার বিকেলে এক দিকে সিপিএমের নির্বাচনী সভা, অন্য দিকে তৃণমূলের প্রচার মিছিলের জেরে গোঘাটের বিভিন্ন রাস্তায় উত্তেজনা দেখা যায়। রাস্তাগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে শুধু লাঠিধারী স্থানীয় সিভিক পুলিশে যোগ দেওয়া অল্পবয়সী ছেলেদেরই দেখা মিলেছে। বালি, কুমারগঞ্জ, বেঙ্গাই, সেনাই প্রভৃতি গ্রাম থেকে সভায় আসার পথে মারধর করে সিপিএমের লোকজনকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কাঁঠালি গ্রাম থেকে সিপিএমের সভায় আসা মহিলাদের রাস্তায় ঘিরে ধরে গালিগালাজ এবং শ্লীলতাহানির হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। একই ভাবে সভা সেরে ফেরার পথেও গোঘাটের রেজিস্ট্রি অফিস-সংলগ্ন রাস্তা-সহ বিভিন্ন জায়গায় বাস থেকে নামিয়ে সিপিএমের লোকজনকে পেটানো হয়েছে বলে রাতেই সিপিএমের পক্ষে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করা হয়।
সিপিএমের সভায় যাওয়াকে কেন্দ্র করে রাত ৯টা নাগাদ গোঘাটের পুইনা গ্রামের আদিবাসী পাড়ার দু’দলের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুইনা গ্রামের আদিবাসীপাড়া অধিকাংশ সিপিএম সমর্থক। তাঁদের অভিযোগ, সিপিএমের সভা থেকে ফেরার পরে রাতে কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক চড়াও হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে মারধর করে। সিপিএম নেতা রবি মান্ডি ক্ষতবিক্ষত হন। এরপরেই পুইনায় সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা পাল্টা মারে বলে অভিযোগ। ওই হামলায় তৃণমূলের মহাদেব রায় এবং আদিত্য রায় গুরুতর জখম হন।
সিপিএমের গোঘাট জোনাল কমিটির সম্পাদক অরুণ পাত্র বলেন, “তৃণমূলের লাগাতার সন্ত্রাস নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি। পুলিশের পক্ষপাতিত্ব নিয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আমাদের কর্মীরা প্রথম মার খেয়েছেন। পরে গ্রামবাসীই প্রতিরোধ করেন। কিন্তু মামলা সাজানো হয়েছে উল্টো। আমাদের দলের লোকদের অভিযুক্ত করে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের লোকজনের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে।” অন্য দিকে, গোঘাটের তৃণমূল নেতা প্রদীপ রায় বলেন, “সিপিএমের সভায় প্ররোচিত হয়ে ওদের দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা গ্রামে ফিরেই আমাদের ছেলেদের উপরে হামলা শুরু করে। আমরা তা প্রতিরোধ করেছি।” পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের অবশ্য দাবি, যেমন অভিযোগ হয়েছে, সেই মোতাবেকই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।