বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বাগদার বয়রা-দাসপাড়া গ্রামের এক ব্যক্তিকে তাঁর বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তিন বিএসএফ জওয়ানের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার রাতে স্মরজিৎ দাস (৪০) নামে ওই ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ মেলে তাঁর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে সলক-জামতলা এলাকায়। পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে স্মরজিতের স্ত্রী শোভারানিদেবী জানিয়েছেন, ওই রাতে বিএসএফের ২৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের স্থানীয় উত্তরপাড়া ক্যাম্পের দুই আধিকারিক এবং এক কনস্টেবল বাড়িতে ঢুকে তাঁর স্বামীকে রাইফেলের বাট দিয়ে মারতে মারতে নিয়ে যায়। বাধা দিতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়।
বিএসএফের স্থানীয় আধিকারিকেরা ওই মৃত্যুর ঘটনায় তাঁদের কেউ জড়িত নন এবং স্মরজিতকে তাঁদের কেউ তুলে নিয়েও যাননি বলে দাবি করেছেন। বিএসএফের এডিজি বংশীধর শর্মা অবশ্য বলেন, “গুরুতর অভিযোগ। আইজিকে বলেছি, দু’এক দিনের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে। আমরা সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।” উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্মরজিৎ পেশায় খেতমজুর ছিলেন। তবে, মাঝেমধ্যে সীমান্ত দিয়ে তাঁকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ কাফ-সিরাপ পাচার করতেও দেখা গিয়েছে। তিনি মাস তিনেক বাড়িছাড়া ছিলেন। শুক্রবারই ফেরেন। অভিযোগ, তিন বিএসএফ জওয়ান শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ নাগাদ বাড়ি থেকে স্মরজিতকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। রাত ১২টা নাগাদ রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন এক গ্রামবাসী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্মরজিতের আত্মীয়েরা। বাগদা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে রাতেই তিনি মারা যান। তাঁর মাথায় ক্ষত ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত এলাকার মানুষের অভিযোগ, গ্রামে ঢুকে বিএসএফ জওয়ানরা সাধারণ মানুষকে নানা ভাবে হেনস্থা করেন। স্মরজিতের ভাই সুভাষ বলেন, “অভাবের জন্য কখনও দাদা কাফ-সিরাপ পাচার করত। কয়েক মাস আগে বিএসএফ ওর বাড়ি থেকে কিছু কাফ-সিরাপের বোতল উদ্ধার করেছিল। তারপর দাদা ওই কাজ ছেড়ে দেয়। তা সত্ত্বেও জওয়ানেরা এসে ওকে মেরে ফেলার হুমকি দিত। ওরাই দাদাকে খুন করল।” স্মরজিতের ছেলে বিশ্বজিতের দাবি, ঘটনার পরে তাঁরা বিএসএফের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিএসএফ জওয়ানরা খুুনকে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বলে চালানোর চেষ্টা করছেন।