সরকারি দুই দফতরের টানাপোড়েনে পানীয় জলের সঙ্কটে পড়েছেন বাসিন্দারা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী ব্লকের মসজিদবাটি, সানাপাড়া, সরদারপাড়া, গদখালি এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ দীর্ঘ ৭-৮ মাস ধরে পানীয় জল পাচ্ছেন না। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বাসন্তীর এই সব এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পাইপলাইনে জল সরবরাহ করত। গত ৭-৮ মাস আগে পূর্ত সড়ক বিভাগ বাসন্তী থেকে গদখালি পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করে। সেই সময় রাস্তার পাশে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বসানো জলের পাইপলাইন নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলেওই সব এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ। এতে এক দিকে যেমন এলাকার মানুষ পানীয় জলের সমস্যায় পড়েছেন, তেমনই গদখালি হয়ে সুন্দরবনে ঘুরতে যাওয়া পর্যটক, গাড়ির চালক বা স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও সমস্যায় পড়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কল্যাণ ভুঁইয়া, স্বপন মণ্ডল, রাধারানি সরদার বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে আমরা পানীয় জলের সমস্যায় জেরবার। প্রশাসনের সর্বস্তরে জানিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না। এক দফতর অন্য দফতরের উপর দায় চাপিয়ে বসে আছে। কী করব বুঝতে পারছি না। ৩-৪ মাইল দূর থেকে পানীয় জল বয়ে আনতে হচ্ছে। এ ছাড়া, বাড়ির কাজে পুকুরের জল ব্যবহার করতে হচ্ছে। রোগভোগ হতে পারে জেনেও আমরা নিরুপায়।” সুন্দরবন নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “এই সব এলাকায় জলের দাবিতে আমরা রাস্তা অবরোধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাবে আন্দোলন করেছি। প্রশাসনের সর্বস্তরে চিঠিও দিয়েছি। বদলে শুধু আশ্বাসই দেওয়া হয়েছে। কোনও কাজ হয়নি।”
বাসন্তীর বিডিও কওসার আলি বলেন, “ওই এলাকায় পানীয় জলের খুব সমস্যা রয়েছে। আমি নিজে ওই সমস্ত এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে সংশ্লিষ্ট দফতরকে বলেছি, দ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে।”
ক্যানিংয়ের পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই এলাকায় রাস্তার পাশে জলের পাইপলাইন বসানোর সময় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর আমাদের অনুমতি নেয়নি। আমরা যখন ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্র্যান্ট ফান্ড-এর টাকায় ওই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করিতখন জানতাম না যে, রাস্তার পাশে জলের পাইপলাইন আছে। ফলে রাস্তা করতে গিয়ে পাইপ নষ্ট হয়। জানা থাকলে প্রকল্পের মধ্যে পাইপ লাইন মেরামতির খরচ ধরে রাখতে পারতাম। কিন্তু এখন আমাদের কাছে এ বাবদ কোনও টাকাই নেই যে, এই কাজ করব।”
জনস্বাস্থ্য-কারিগরি দফতরের সহকারী বাস্তুকার অরুণ হালদার বলেন, “রাস্তা করার সময় ওই দফতর আমাদের কিছু জানায়নি। জানালে পাইপলাইন সরিয়ে নিতাম। এখন আমাদের টাকা নেই। তবে এলাকার মানুষের সমস্যার কথা ভেবে দফতরে টাকার জন্য আবেদন করেছি। টাকা এলে কাজ শুরু করা হবে।”