চাপ ছিল, তবু সামলে দিলেন চাঁপা

গত কয়েক বছর ধরে রাজনীতিতে মহিলাদের অংশগ্রহণ ক্রমেই বাড়ছে। ভোটের ময়দানেও দায়িত্ব পেয়ে অনায়াসে দাপিয়ে বেড়ালেন মহিলারা। কোথাও প্রশাসনের নির্দেশে ভোট পরিচালনা করলেন তাঁরা। আবার কোথাও দলের এজেন্টের দায়িত্ব সামলালেন। রায়দিঘির দিঘিরপাড় করালিরচক হাইস্কুলের সংস্কৃত শিক্ষিকা চাঁপা দাস ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছেন ভোট মানেই বোমাবাজি, খুনোখুনি, ছাপ্পা। পরে বন্ধুবান্ধব, সহকর্মীদের মুখে শুনেছেন ভোটকেন্দ্রের কাহিনী।

Advertisement

দিলীপ নস্কর ও সীমান্ত মৈত্র

ডায়মন্ড হারবার ও বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৪ ০৪:০৬
Share:

ডায়মন্ড হারবারে একটি মহিলা পরিচালিত বুথ। নিজস্ব চিত্র।

গত কয়েক বছর ধরে রাজনীতিতে মহিলাদের অংশগ্রহণ ক্রমেই বাড়ছে। ভোটের ময়দানেও দায়িত্ব পেয়ে অনায়াসে দাপিয়ে বেড়ালেন মহিলারা। কোথাও প্রশাসনের নির্দেশে ভোট পরিচালনা করলেন তাঁরা। আবার কোথাও দলের এজেন্টের দায়িত্ব সামলালেন।

Advertisement

রায়দিঘির দিঘিরপাড় করালিরচক হাইস্কুলের সংস্কৃত শিক্ষিকা চাঁপা দাস ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছেন ভোট মানেই বোমাবাজি, খুনোখুনি, ছাপ্পা। পরে বন্ধুবান্ধব, সহকর্মীদের মুখে শুনেছেন ভোটকেন্দ্রের কাহিনী। এ বার নিজেই ভোটকেন্দ্র পরিচালনা করলেন স্বচ্ছ্বন্দে। একেবারে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে হবে শুনে শুরুতে একটা চাপা টেনশন ছিল। কিন্তু কাজে নেমে ভালই সামলালেন দায়িত্ব।

মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের মোট বুথের সংখ্যা ১৮২৫টি। এর মধ্যে ৩৫টি বুথের দায়িত্ব ছিল মহিলাদের কাঁধে। চাঁপাদেবী ছিলেন মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের সাতঘড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩৪/৩ নম্বর বুথে। সঙ্গে আরও তিন শিক্ষিকা সোমা সিংহ সর্দার, পুনম মাইতি এবং দিপালী হালদার। দুই আধাসেনা ছাড়াও নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন এক মহিলা পুলিশ। চাঁপাদেবীর কথায়, “প্রথম দিকে টেনশন ছিল। পরে চাপ কেটে কেটে যায়। হাতেকলমে কাজ করার অনুভূতিটা অসাধারণ।” অন্য মহিলারা জানালেন, ভোটের কাজে যেতে হবে শুনে প্রথমে কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। তবে, দায়িত্ব পালন করে তাঁরা খুশি।

Advertisement

অন্য দিকে, বনগাঁ পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে এ বার প্রথম মহিলা এজেন্ট দিল তৃণমূল। পুরপ্রধান জ্যোৎস্না আঢ্য এবং তাঁর স্বামী শঙ্করবাবুর (বনগাঁ শহর তৃণমূল সভাপতি) বক্তব্য, মহিলাদের রাজনীতিতে যোগদানে উৎসাহ জোগাতেই এই পরিকল্পনা। এই ওয়ার্ডে ছ’টি বুথের মধ্যে শিমুলতলা জিএসএফপি এবং মতিগঞ্জ জিএসএফপি স্কুলে মহিলা এজেন্ট ছিল।

২০১০ সালে পুরভোটের পর এই এলাকায় মহিলাদের মধ্যে রাজনীতি নিয়ে আগ্রহ বাড়ে। তার আগে রাজনীতি নিয়ে খুব একটা উৎসাহী ছিলেন না এলাকার মহিলারা। এমনইটাই জানালেন এলাকার বাসিন্দা তথা তৃণমূলের বুথ এজেন্ট বছর চল্লিশের প্রকৃতি পাল। প্রকৃতিদেবী বনগাঁ পুরসভা স্বাস্থ্য দফতরের একজন কর্মীও বটে। তাঁর কথায়, “১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূল করলেও এই প্রথম আমি পোলিং এজেন্ট হওয়ার সুযোগ পেলাম। এর জন্য অবশ্য জ্যোৎস্নাদেবীকে কৃতিত্ব দিতে হয়।” একই রকম অভিজ্ঞতা রেখা নাগের। তাঁরও এ বার প্রথম পোলিং এজেন্ট হওয়ার সুযোগ ঘটেছে। তিনি জানলেন, “তৃণমূলের অনেক মিটিং মিছিলে গেলেও এ বার এমন একটি কাজের সুযোগ পেয়ে খুশি।” জানান, স্বামীও তাঁকে খুব উৎসাহ দিয়েছেন।

দলের মহিলাদের পোলিং এজেন্ট হিসাবে সুযোগ দেওয়া নিয়ে কী বলছেন জোৎস্নাদেবী? তাঁর কথায়, “মহিলারা সব বিষয়েই এগিয়ে চলেছেন। তাই রাজনীতিতেও তাঁদের আরও সক্রিয় করে তুলতে এই সিদ্ধান্ত।” শঙ্করবাবু বলেন, “এখন মহিলারা যে ভাবে অন্য কাজের সঙ্গে রাজনীতিতে এগিয়ে আসছেন তাতে আমরা খুশি। এতে দলেরও সুবিধা হবে। এই ভাবে আমরা এলাকায় মহিলা সংগঠন ও আমাদের সংগঠনকে আরও মজবুত করবো। তা ছাড়া, বিভিন্ন রাজনৈতিক কাজে মহিলাদের যুক্ত করা আমাদের উদ্দেশ্য।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement