পরিত্যক্ত ইটভাটা কার দখলে থাকবে, তা নিয়ে বিবাদ শুরু। দলের দুই গোষ্ঠীর সেই বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করেও সোমবার ব্যর্থ হয়েছিল তৃণমূল পঞ্চায়েত। মঙ্গলবার সকালেই শুরু হয় সংঘর্ষ। উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের সোনাখড়কি গ্রামে আহত হন জনা দশেক। ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় দোকানে। লাঠি চালায় পুলিশ। নামে র্যাফ। জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়।
‘আরবিএম’ নামে ওই পরিত্যক্ত ইটভাটাতেই বছর দুয়েক আগে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল এক গৃহবধূকে। সেই ভাটা থেকে রাতে মাটি কেটে অবৈধ ভাবে বিক্রি হচ্ছিল। পুলিশ জানায়, ওই ভাটার দখল নিয়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য মোতিয়ার রহমানের ও তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী হবিবুর রহমান ও গ্রামবাসীদের একাংশের বিবাদ চলছিল। সোমবার তা নিয়ে পঞ্চায়েতে বৈঠকও হয়। মীমাংসা হয়নি। ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের প্রধান রোজিনা বিবি বলেন, ‘‘বিবাদ মেটেনি। কিন্তু ব্যাপারটা এখানে পৌঁছবে ভাবিনি।’’
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকালে অভিযোগ জানাতেই কয়েকটি মোটরবাইকে বিধায়ক রথীন ঘোষের কাছে যাচ্ছিলেন হবিবুর-সহ বেশ কিছু গ্রামবাসী। অভিযোগ, পথ আটকায় মোতিয়ার রহমান ও তাঁর সঙ্গীরা। চলে বোমাবাজি। গ্রামবাসীদের মারধর করা হয়। হবিবুর বলেন, ‘‘যাকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছি, সেই মোতিয়ার ও তার দাদা মুজিবর হামলা চালায়। বিধায়ক, মুখ্যমন্ত্রীকে সব জানিয়েছি।’’
জগন্নাথপুরের কাছে বেলা ১১টা নাগাদ বারাসত-ব্যারাকপুর রোড অবরোধ করেন মুজিবর ও গ্রামবাসীরা। মোতিয়ারের পাল্টা অভিযোগ, হবিবুর ও তার দল চায়ের দোকানে, তৃণমূলের অফিসে ও মোটরবাইকে ভাঙচুর চালায়। “ওরা তৃণমূল? ওরা আসলে সিপিএম,’’ দাবি মোতিয়ারের। অবরোধ হটাতে লাঠি চালায় পুলিশ। জনতা ইট ছোঁড়ে। জখম হন বেশ কয়েক জন। পরে র্যাফ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিধায়ক, মধ্যমগ্রামের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের জেলা সম্পাদক রথীন ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে অযথা জটিলতা হচ্ছে। এর সঙ্গে দলীয় বিবাদের সম্পর্ক নেই। কাউকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’’