Mamata Banerjee

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টার বিভ্রাট নিয়ে তদন্ত করবে ডিজিসিএ

গত ২৭ জুন জলপাইগুড়ির ক্রান্তির সভাস্থল থেকে হেলিকপ্টারে বাগডোগরা পৌঁছনোর কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু, মাঝপথে দুর্যোগের মুখে পড়ে মুম্বইয়ের একটি সংস্থা থেকে ভাড়া নেওয়া সেই হেলিকপ্টার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৩ ০৮:১৬
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টার বিভ্রাট নিয়ে তদন্তে নেমেছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ)। বেসরকারি ওই হেলিকপ্টারের ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (ডিএফডিআর)-এ থাকা তথ্য খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে ডিজিসিএ সূত্রের খবর।

Advertisement

দেশের আকাশে বিমান, হেলিকপ্টার সংক্রান্ত কোনও দুর্ঘটনা বা বেনিয়ম ঘটলে আকাশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ তার তদন্ত করে। তারা জানিয়েছে, ঘটনার দিন ক’টার সময়ে হেলিকপ্টার উড়েছিল, তার ওয়েদার রেডারে কোনও আগাম সতর্কতা ছিল কি না, ক’টার সময়ে হেলিকপ্টার মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিল, সে সব তথ্যই জমা থাকে ডিএফডিআর-এ।

উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন জলপাইগুড়ির ক্রান্তির সভাস্থল থেকে হেলিকপ্টারে বাগডোগরা পৌঁছনোর কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু, মাঝপথে দুর্যোগের মুখে পড়ে মুম্বইয়ের একটি সংস্থা থেকে ভাড়া নেওয়া সেই হেলিকপ্টার। দৃশ্যমানতা প্রায় তলানিতে চলে যায়। ঝড়-বৃষ্টিতে বিপজ্জনক ভাবে দুলতে থাকে হেলিকপ্টারটি। বেগতিক দেখে হেলিকপ্টারের দুই পাইলট শালুগাড়ায় সেনাবাহিনীর হেলিপ্যাডে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে জরুরি অবতরণ করেন। অভিযোগ, খারাপ আবহাওয়ার জন্য দুলুনিতে এবং শালুগাড়ায় সিঁড়ি না থাকায় হেলিকপ্টার থেকে নামতে গিয়ে কোমরে ও হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

ঘটনার কথা জানতে পেরে সমস্ত তথ্য চেয়ে পাঠায় ডিজিসিএ। প্রধানত দু’টি প্রশ্ন ওঠে। এক, ওই আধুনিক হেলিকপ্টারে ওয়েদার রেডার রয়েছে। কোনও গন্তব্যে রওনা হওয়ার আগে আকাশপথে (এনরুট) কোথাও দুর্যোগ রয়েছে কি না, তা আগেভাগে জেনে যাওয়ার কথা ছিল পাইলটদের। প্রশ্ন, সে দিন কি হেলিকপ্টারের ওয়েদার রেডার মারফত সেই দুর্যোগের কথা জানা যায়নি? যদি জানা গিয়ে থাকে, তা হলে তার পরেও কেন ঝুঁকি নিয়েছিলেন পাইলটেরা? দ্বিতীয় প্রশ্ন, মাঝপথে কোনও দুর্যোগে পড়লে সাধারণত যেখান থেকে রওনা হয়েছিল হেলিকপ্টার সেখানেই ফিরে আসার কথা। এ ক্ষেত্রে তা হয়নি।

ডিজিসিএ কর্তারা জানিয়েছেন, ওই ঘটনার পরে কপ্টারের দুই পাইলটের ভূয়সী প্রশংসা করে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই চিঠিও এখন তদন্তের অঙ্গ। এক কর্তার কথায়, ‘‘এই ধরনের ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে সামান্য গাফিলতির সন্দেহ থাকলে পাইলটদের ডিউটি থেকে বসিয়ে তদন্ত করা হয়। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে স্বয়ং ভিআইপি যে ভাষায় পাইলটদের প্রশাংসা করেছেন সেটা তাঁদের পক্ষেই গিয়েছে। তাঁদের বসিয়ে দেওয়া হয়নি। তদন্ত শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

তবে কর্তাদের অভিমত, অনেক সময়ে তুলনায় কম খারাপ আবহাওয়া থাকলেও ঝুঁকি নেন পাইলটেরা। মাঝ আকাশে দুম করেই সেই আবহাওয়া বেশি খারাপ হয়ে যায়। তখন মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। দ্বিতীয়ত, খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে পড়লে যেখান থেকে ছেড়েছে, সবসময় সেখানেই যে ফিরে আসতে হবে এমনটাও নয়। আকাশে পাইলটই শেষ কথা। তাঁরা যে ঠিক বলে মনে করবেন, সেটাই করবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement