—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রথমার্ধে প্রবল বৃষ্টি পায়নি গাঙ্গেয় বঙ্গ। ঘাটতি ছুঁয়েছিল ৪০ শতাংশ। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য সেই সব ঘাটতি পুষিয়ে দিয়েছে বর্ষা। মৌসম ভবনের হিসেবে, সোমবার সরকারি ভাবে বর্ষার শেষ দিনে এসে গাঙ্গেয় বঙ্গের ঘাটতি পুরো মিটে গিয়েছে। ১ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর (আবহাওয়া দফতরের খাতায় যে চার মাস বর্ষাকাল হলে চিহ্নিত) পর্যন্ত সামগ্রিক ভাবে পশ্চিমবঙ্গে এ বার ৩ শতাংশ উদ্বৃত্ত বৃষ্টি হয়েছে। উত্তরবঙ্গে মরসুমের গোড়ায় অতি উদ্বৃত্ত বৃষ্টি হলেও দ্বিতীয়ার্ধে তুলনায় কম বৃষ্টি হয়েছে। বর্ষার এমন খামখেয়ালি মতিগতি দেখে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, পরিসংখ্যানে ‘স্বাভাবিক’ বর্ষা হলেও বৃষ্টির এমন ছন্দ কি আদৌ লাভজনক?
আবহবিদদের অনেকে বলছেন, উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গে যখনই বৃষ্টি হয়েছে, তখনই অল্প সময়ে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ দেখা গিয়েছে। অল্প সময়ে বেশি বৃষ্টি কিন্তু লাভজনক নয়। বরং তা থেকে বন্যা, ধসের মতো বিপর্যয় ঘটে। বর্ষার সময়ে ভূগর্ভের জলস্তরের ভাঁড়ার পূরণ হয়। কিন্তু অল্প সময়ে জোরালো বৃষ্টি হলে সেই জলের বেশির ভাগই মাটির ঢাল অনুযায়ী গড়িয়ে যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণে ভূগর্ভে ঢুকতে পারে না।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের প্রাক্তন ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলছেন, অতিবৃষ্টি হলে ধান গাছের গোড়ায় জল জমে। সেটা ধানের ফলনের উপযোগী। এ ছাড়া, অতি বর্ষণে কিন্তু লাভ নেই। বিশেষত আনাজ চাষের ক্ষেত্রে অল্প সময়ে প্রবল বৃষ্টি ক্ষতি করে। ফুল চাষের ক্ষেত্রেও এই ধরনের বৃষ্টি মারাত্মক ক্ষতিকর। এ ছাড়া, বন্যায় তো পুরোটাই ক্ষতি হয়। গোকুলচন্দ্র বলছেন, ‘‘ধান গাছের ফুল আসার সময় জল জমে থাকা চাষের সহযোগী। এ বার গাঙ্গেয় বঙ্গে সেই সময়ে ভারী বৃষ্টি হলেও উত্তরবঙ্গের বহু জেলায় কিন্তু তেমন বৃষ্টি হয়নি।’’