প্রতীকী ছবি।
গ্রামের এক জন সাইকেলে ঘুরে পাইপলাইন বা নলকূপের জলের নমুনা সংগ্রহ করে তা পৌঁছে দিচ্ছেন পরীক্ষাগারে। সেই জল কতটা পানযোগ্য, তার রিপোর্ট পরীক্ষাগার থেকে সংগ্রহ করে তা টাঙিয়ে দিচ্ছেন পঞ্চায়েত অফিসের চাতালে। কোনও জলে দূষণ ধরা পড়লে গ্রামবাসীদের সতর্ক করে দিচ্ছেন তিনিই।
ছবিটা এমনই হওয়ার কথা। কিন্তু অনেক গ্রামেই ‘তাঁর’ অর্থাৎ এই ধরনের কর্মীর দেখা মিলছে না!
গ্রামবাসীদের দূষণমুক্ত পানীয় জল সরবরাহের লক্ষ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতে ওই সব কর্মী নিয়োগের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিল রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। কিন্তু বছরশেষে দেখা যাচ্ছে, অনেক পঞ্চায়েত এখনও সেই নমুনা সংগ্রহকারীই নিয়োগ করে উঠতে পারেনি! অনেকে আবার কাজে যোগ দিয়েও নিয়মিত পারিশ্রমিক না-পেয়ে কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে নতুন নির্দেশিকা জারি করে সব গ্রাম পঞ্চায়েতেই পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহের কর্মী নিয়োগ বাধ্যতামূলক করল গ্রামোন্নয়ন দফতর।
এক পঞ্চায়েত-কর্তার কথায়, ‘‘বাড়ি বাড়ি ঘুরে জলের নমুনা জোগাড়ের জন্য প্রত্যেক সংগ্রহকারীকে সাইকেল কিনে দিতে বলা হয়েছিল পঞ্চায়েতগুলিকে। ওই কর্মীরা কত পারিশ্রমিক পাবেন, নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে তা-ও।’’
পঞ্চায়েত দফতরের হিসেব বলছে, সংগ্রহকারীদের দৈনিক সর্বনিম্ন ৭৫ এবং সর্বাধিক ১৪০ টাকা আয় করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অনেক সংগ্রহকারী এই পারিশ্রমিকে সন্তুষ্ট নন। তাঁরা বলছেন, ‘‘এর চেয়ে দিনমজুরের পারিশ্রমিকও বেশি। আমাদের ঝড়-জল-রোদে কাজ করতে হয়। এই টাকায় সংসার চলে?’’ পঞ্চায়েত দফতর মেনে নিয়েছে সংগ্রহকারীদের দাবি। ‘‘ওঁদের পারিশ্রমিক বাড়ানোর কথা চলছে,’’ বলেন দফতরের এক কর্তা।
রাজ্যে ৩৩৪১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩০ শতাংশে জলের নমুনা সংগ্রহকারী নেই। কেন নেই? কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে পঞ্চায়েত-প্রধানদের। সেই সঙ্গে তিন মাসে লোক নিয়োগ সারতে বলা হয়েছে।
জলে জীবাণু মিললে কী হবে? ‘‘দফতরই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। আমাদের কাজ জলের লাইনে নজরদারি চালানো, কোথাও পাইপ ফাটলে বা ইচ্ছে করে ফাটিয়ে জল চুরি করা হলে তা দেখা,’’ বললেন এক পঞ্চায়েত-কর্তা।